• ঢাকা
  • শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

গ্রামীণ ঐতিহ্য গরুর হাল বিলুপ্তির পথে


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ১৮ ফেরুয়ারী, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১১:৪০ এএম
গ্রামীণ ঐতিহ্য
গরুর হাল বিলুপ্তির পথে

মশিয়ার রহমান, জলঢাকা, (নীলফামারী) প্রতিনিধি: রঙিন দুনিয়ার এই রঙ্গ মঞ্চের নাট্যশালায় সময় আসে সময় যায়। আর এই সময়ের পথ পরিক্রমায় পরিবর্তন হয় অনেক কিছুই। সেইসঙ্গে হারিয়ে যায় নিজস্ব কিছু অতীত ঐতিহ্য ।

সময় পরিবর্তনের গতিধারায় নীলফামারীর জলঢাকায় গ্রাম বাংলার কৃষকের ঘরে থাকা লাঙ্গল, জোয়াল, মই ও হালের গরু আজ বিলুপ্তির পথে।গেল কয়েক বছর আগে কালেভদ্রে কৃষকের উঠোনসহ গাও গ্রামের মেঠো পথে হালের গরু চোখে পড়লেও এখন আর তেমন চোখে পড়েনা। এক সময় গৃস্থ পরিবারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশিয়ে থাকা সুখ দুঃখ হাসি কান্না জীবন জীবিকা অন্যতম গ্রামীণ ঐতিহ্য গরুর হাল এখন শুধুই স্মৃতি। স্মৃতির আয়নায় ধরে রাখতে পুরনো ঐতিহ্য লাঙ্গল জোয়াল মই অনেক প্রবীন কৃষক তুলে রেখেছেন ঘরের বারান্দায়। যান্ত্রিক যুগে পরিবর্তন এসেছে সব কিছুতেই। আর এই পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় বাদ পড়েনি কৃষকের কৃষি।

প্রযুক্তির কল্যাণে সময়ের সাথে পাল্লা দিতে না পারায় পরিবেশ বান্ধব কাঠের লাঙ্গলের জায়গায় এখন স্থান করে নিয়েছে কলের লাঙ্গল । কেবল জমি চাষই নয়, জমিতে ধানের চারা রোপণ থেকে শুরু করে জমিতে নিড়ানি, সার দেওয়া, কীটনাশক ছিটানো, ধান কাটা-মাড়াইসহ শুকানোর কাজ হচ্ছে আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে। 

এক সময় গ্রামীণ জনপদের মানুষদের কাক ডাকা ভোরে ঘুম ভাঙ্গত লাঙ্গল, জোয়াল আর হালের গরুর মুখ দেখে। এখন যন্ত্রের আধিপত্যে , সেই জনপদের মানুষদের ঘুম ভাঙ্গে শব্দ দূষণ পাওয়ার টিলার, ট্রাক্টরের শব্দে।জমিতে বীজ বপন অথবা চারা রোপণের জন্য জমির মাটি চাষের ক্ষেত্রে হাল ব্যবহার করে আর ওই মাটি মাড়িয়ে সমান করার জন্য মই ব্যবহার করা হতো। কৃষিজমি আবাদের উপযোগী করার জন্য একজন লোক, একজোড়া ষাড়,মহিষ প্রয়োজন হতো। বাংলাদেশের হাজার বছরের
ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লাঙ্গল, জোয়াল, মই, গরুও মহিষ।

স্থানীয় একাধিক প্রকৃত প্রবীণ কৃষকরা জানান, এক সময় জলঢাকায় প্রায় প্রতিটি বাড়ির প্রতিটি ঘরেই ছিল গরুর লালন- পালন। গরুগুলো যেন পরিবারের এক একটা সদস্যের মতো। তাদের দিয়ে একরের পর একর জমি চাষ করার কাজে ব্যবহার করা হতো। তাজা ঘাস আর ভাতের মাড়, খৈইল, ভুষি ইত্যাদি খাইয়ে হ্নষ্টপুষ্ট করে তোলা হালের জোড়া বলদ দিয়ে জমি চষে বেড়াতেন কৃষক। কিন্তু এখন গোচারণ ভ্থমির অভাব, গো খাদ্যের মূল্য উর্ধ্বমুখী হওয়ার কারণে অনেকেই গরু লালন পালন ছেড়ে দিয়েছেন। উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের চর হলদিবাড়ি  গ্রামের কৃষক আজিজুল ইসলাম, মোতালেব  হোসেন  জানান, অনেকের জীবনের সিংহভাগ সময় কেটেছে চাষের লাঙ্গল, জোয়াল আর গরুর পালের সঙ্গে। 

এক সময়ের হালচাষের দীর্ঘ স্মৃতি কথা জানাতে গিয়ে তারা বলেন, ছোট বেলা থেকে হালচাষের কাজ দেখভাল করতেন। এখন আমরা সেই পুরনো স্মৃতি গুলোকে আঁকড়ে ধরে কষ্টের দিনগুলোর কথা মনে করে সময় পার করছি। বর্তমান সময়ে ট্রাক্টরের দাপটে এখন আর গরু দিয়ে হালচাষ হয় না বললেই চলে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image