জাফর আলম,কক্সবাজার : কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের শিলখালী ও হোয়াইক্যং রেঞ্জের মনখালী, শিলখালী, হলবনিয়া, জাহাজ পুরা, বড়ডেইল, মাথাভাঙা, জমপাড়া, মারিশবনিয়া, নোয়াখালী পাড়া বনের পাহাড়ের দিকে তাকালে বড় বড় গাছে ঠাসা জঙ্গল চোখে পড়ত। এখানে শিয়াল, বানর, হনুমান, হরিণ, বন মোরগ, হাতি, চিতা ও মেছো বাঘসহ নানা বন্য প্রাণী বিচরণ করতো। অনেক সময় এসব প্রাণী পাহড়ের নিকটবর্তী লোকালয়ে এসে পড়ত। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে এসে হঠাৎ নির্বিচারে হত্যা করা হয় দীর্ঘ ঐতিহ্যের বিশালাকার এ বৃক্ষরাজি।
অল্প সময়ে পাহাড় থেকে পাহাড় বৃক্ষ উজাড় হয়ে পরিণত হয় ন্যাড়া ভূমিতে। আবাস স্থল হারিয়ে বিলুপ্ত হয়ে যায় নানা বন্যপ্রাণী। এরপর দখলদাররা পাহাড় গুলোকে দখল করতে শুরু করে। ধীরে ধীরে পাহাড় গুলো পরিণত হয় ব্যক্তি দখলদারিত্ব ভূমিতে।পরে বনকর্মীরা তাদের বুঝাতে তৎপর হয়ে উঠে যে, শান্তিতে বাঁচতে হলে প্রয়োজন সবুজের ছায়া।তাই বন বিভাগের সঙ্গে এতাত্ম হয়ে পাহারা বসানো হয় গাছ বাঁচাতে।ফলে ন্যাড়া পাহাড়ে আবারও হাতছানি দিচ্ছে সবুজের সমারোহ বৃক্ষরাজি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শিলখালী ও হোয়াইক্যং রেঞ্জের মনখালী, হোয়াইক্যং, রাজারছড়া, শিলখালী বিটের পাহাড় সবুজাত সৃষ্টির মাধ্যমে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ হ্রাস, জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবিকার উৎস হিসেবে বন বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।বৃক্ষের পরির্চয়ায় বনকর্মীরা অবহেলা না করে কাজ করায় তাঁদের কর্মে বনপ্রেমি ও সাধারণ মানুষ প্রশংসা করেছেন।কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের শিলখালী রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা শাফিউল ইসলাম, হোয়াইক্যং বিট কর্মকর্তা জহির উদ্দীন মিনার চৌধুরী ও মনখালী বিট কর্মকর্তা শিমুল কান্তি নাথের সহায়তায় বন ভূমিতে গড়ে উঠেছে নীরব সবুজ বিপ্লব। বনভুমিকে সাজিয়েছে সবুজ সমারোহে। যতদুর চোখ যায়-সবুজের সবুজের সমারোহে ভরে গেছে শিলখালী ও হোয়াইক্যং রেঞ্জের দখলদারদের ন্যাড়া পাহাড় গুলো।
জানা গেছে, প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের দখলে ছিল এই পাহাড়গুলো। ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযান করে পাহাড় গুলো দখল মুক্ত করে গড়ে তোলা হয় সুফল বাগান। এই সুফল বাগানের সবুজ সমারোহ এখন হাতছানি দিকে ডাকছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পরিবেশ প্রেমীরা। মনখালী বিট কর্মকর্তা শিমুল নাথ বলেন, পাহাড় গুলো যেখানে ধূ-ধূ মরুভূমি ছিল, সেখানে বর্তমানে সবুজ বনে পরিনতি হয়েছে।
স্থানীয়রা আরও সচেতন হলে পাহাড় রক্ষা এবং ন্যাড়া পাহাড়সমুহ আরও সবুজ বনে পরিনতি হবে বলে জানান তিনি। শিমুল আরও জানান,আমি যোগদানের আগে পাহাড় গুলো ভূমিদস্যুদের দখলে ছিল। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে ন্যাড়া পাহাড় গুলোতে সুফল বাগান করেছি।বিভিন্ন প্রজাতির চারা রোপন করেছি।
স্থানীয়রা সচেতন হলে পাহাড় গুলো রক্ষা এবং ন্যাড়া পাহাড় গুলো আরও সবুজের সমারোহ হবে বলেন তিনি। শিলখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা শাফিউল ইসলাম বলেন, এলাকার লোকজন যদি সচেতন হয়, তাহলে ন্যাড়া পাহাড় গুলো সবুজ সমারোহ করা সম্ভব। বন ও বনভূমি রক্ষায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি বলে জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: