• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ১০ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ০৩ এপ্রিল, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৮:৪৮ পিএম
দাবি জানিয়েছে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ’ নাম
পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করে শাস্তির দাবি

নিউজ ডেস্ক:  রাজধানীতে কলেজশিক্ষক লতা সামাদ্দারকে টিপ পরিধান করার কারণে হেনস্তা করায় অভিযুক্ত সেই পুলিশ সদস্যকে অনতিবিলম্ব বরখাস্ত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ’ নামে একটি সংগঠন।

রবিবার (৩ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাবেশ থেকে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।

সমাবেশে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক কাজী সালমা সুলতানা বলেন, ‘আজকে আমরা দাঁড়িয়েছি একজন শিক্ষক লতা সমাদ্দারকে টিপ পরিধান করার কারণে হেনস্তা করার প্রতিবাদে। কিন্তু এর শুরু আজ নয়, শুরু হয়েছিল ২০০৩ সালে যখন হেফাজত নেতা নারীদেরকে তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা করে এবং নারীশিক্ষা বন্ধের দাবি জানায়। এরপর আমরা দেখেছি, সেই জনসভায় একজন সাংবাদিককে নিগৃহীত হতে, তারপরেও আমরা দেখেছি, ওই হেফাজত নেতার সমর্থকরা নারী বিদ্বেষী হয়ে উঠেছে। তারা এমন নারী বিদ্বেষী হয়ে উঠেছে যে, তারা মুক্তমনা পুরুষদেরকেও শত্রু মনে করছে।  তাদের এই কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতার বিপরীতে সাংস্কৃতিক বিপ্লব না হলে বাংলাদেশ অনেকটা পেছনে পড়ে যাবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগোলেও মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ মুক্তভাবে চিন্তা করতে পারে না। তারা শুধু উগ্রবাদকে তাদের সাথী করে নিয়েছে। এই উগ্রবাদীদের থামতে আমরা বাধ্য করবো। বাংলাদেশের পাঠ্যসূচি আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা হোক। বাংলাদেশকে লালন, জারি-সারি, রবীন্দ্রনাথের বাংলাদেশি জায়গায় ফিরিয়ে আনা হোক।’

ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি বিকাশ সাহা বলেন, ‘যেই লক্ষ্য নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেই বাংলাদেশ এখন আর নেই। মুক্তিযুদ্ধের কথা ছিল, বাংলাদেশ হবে এমন, যেখানে কোনও ধরনের বৈষম্য থাকবে না, মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে, যেখানে চলা-ফেরায়, কথাবার্তায় বিধিনিষেধ থাকবে না, মানুষ শান্তিতে সুখে-সমৃদ্ধিতে বসবাস করবে।  কিন্তু  আমরা ২০২২ সালে এসে  দেখতে পাই, একজন শিক্ষক টিপ পরার কারণে রাষ্ট্রীয় পুলিশ বাহিনীর অশালীন আচরণের শিকার হন।  ওই ব্যক্তি শুধু অসদাচরণ করেই ক্ষান্ত হননি।  তাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেওয়া হয় এবং পায়ের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার মাধ্যমে বাংলাদেশে মুক্তবুদ্ধির চর্চার ওপরে আঘাত করা হয়েছে। এটি আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আজকের রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি হচ্ছে এই ঘটনা। আমরা লক্ষ্য করছি, পাঠ্যপুস্তক থেকে মুক্তবুদ্ধি চর্চার বিষয়গুলো উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিজ্ঞান চর্চা বন্ধ করার নানান অজুহাত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা হচ্ছে।  বাংলাদেশের মানুষ তার ইচ্ছে অনুযায়ী পোশাক পরিধান করবে, সাজসজ্জা করবে। বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে সুখে সম্মৃদ্ধিতে বসবাস করবে। কারও ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষায়, কারও বিষেদাগারের কারণে সে আজ বসে থাকবে না।’

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সাহেল আহমেদ বলেন, ‘এমন একটি বিষয় নিয়ে আমাদের শাহবাগে দাঁড়াতে হবে, এটি দুঃখজনক ঘটনা। এমন ঘটনায় আমরা ব্যথিত,ক্ষুব্ধ, হতাশ! দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ইতোমধ্যে ৩৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও যে ব্যাক্তি এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে, সে এখনও অন্ধকারে রয়েছে গেছে।’

নারী পক্ষের সংগঠক মনিষা মজুমদার বলেন, ‘একজন নারী শিক্ষককে টিপ পরার কারণে অকথ্য ভাষায় গালি দেওয়া হয় এবং তাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়। তাকে গালি দেওয়া এবং হত্যাচেষ্টা বাংলাদেশ আইনে স্পষ্ট অপরাধ। আমি সে কারণে এই জায়গায় দাঁড়িয়ে অপরাধীকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

যুব ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুমের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন— ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাহবাগ’র অন্যতম সংগঠক মাহফুজা হক নীলা, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ) সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ, গণসংগীত শিল্পী শতাব্দী ভব, অ্যাডভোকেট জীবনানন্দ জয়ন্তসহ আরও অনেকে।

ঢাকানিউজ২৪.কম /

আরো পড়ুন

banner image
banner image