ডেস্ক রিপোর্টার: বিমানে টিকিট সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মূল্য বৃদ্ধি করে বিপুল টাকা হাতিয়ে নেওয়া বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে মালদ্বীপের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী, রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের, নেতাকর্মী ও সাধারণ প্রবাসীরা। তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শেখ হাসিনা, প্রবাসী কল্যান মন্ত্রী, মাননীয় পযর্টনমন্ত্রী , বিমান মন্ত্রী, বাংলাদেশ বিমান পরিচালক ও বিমান কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
মালদ্বীপ প্রবাসীদের দেশে যাওয়া যেন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।একজন প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা দেশ ও তার পরিবারের জন্য যে পরিমাণ ত্যাগ স্বীকার করেন সেই ত্যাগ কে পুঁজি করে বিমান ব্যবসায়ীরা যেন টিকিটের মূল্য বৃদ্ধিতে প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
ব্যক্তিগতভাবে এমনটিই মনে করেন মালদ্বীপ রেড ক্রিসেন্ট এর অভিবাসী সহায়তা কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবক কামাল হোসেন,, তিনি তার ফেইসবুকে একটি স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এর জন্য প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেন।
প্রবাসীরা যখন কয়েক বছর পর তাদের ক্লান্তি দূর করতে পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন বা বাৎসরিক ছুটি কাটাতে দেশে যাওয়ার উদ্যোগ নেয় ঠিক তখনই বিমান ব্যবসায়ীরা ছয় টাকার টিকিট ১১ টাকায় দাম বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে দুইটি ঈদের সময়,এয়ারলাইন্স গুলো এই কাজটি করে।যে বিমান টিকেট কিছু দিন আগে ও ৬ হাজার ৩৭৫ রুপিয়া ছিলো এখন এই টিকেট সংগ্রহ করতে ১১ হাজার রুপিয়া লাগে।
মালদ্বীপের প্রবাসীরা এটাকে মনে করেন নিত্যান্তই প্রবাসীদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে । যখন বাংলাদেশের বিমান ইউএস-বাংলা মালদ্বীপের রুটে প্রবেশ করে তখন মালদ্বীপের হাই কমিশন, সোশ্যাল ওয়ার্কার মালদ্বীপের সামাজিক সংগঠন রাজনৈতিক সংগঠন ও সাধারণ প্রবাসীসহ সকলেই খুব উৎসাহের সাথে স্বাগত জানিয়ে দেশের বিমান হিসেবে প্রাধান্য দেয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার প্রসার করে । কারন তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে পায় মালদ্বীপ প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। কিন্তু এটা যে তাদের একটি প্রবাসীদের আবেগ কে পুঁজি বানানো তাদের এটা ফাঁদ মাত্র।
এই বিষয়ে মালদ্বীপের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী, ফোর এল ইন্টারন্যাশনাল এর ম্যনাজিং ডিরেক্টর মোঃ হাদিউল ইসলাম, তার ফেইসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেন। মালদ্বীপ প্রবাসীদের স্বপ্ন ইউ,এস-বাংলা বনাম মালদিভিয়ান এয়ারলাইনস।ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স মালদ্বীপের রাজধানী,মালে – ঢাকা / ঢাকা – মালে,রুটে নতুন চালু হওয়ার পর মালদ্বীপ প্রবাসীদের মনে একটি স্বপ্ন জেগেছিল! যে আমরা স্বল্পমূল্যে সহজেই দেশে যাতায়াত করতে পারবো। এই আশা এবং স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল।
তিনি লিখেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের হয়রানির কথা বলে তো শেষ করা যাবেই না। এখন আবার দুই এয়ারলাইনস মিলে টিকিটের মূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি তা গ্রহণযোগ্য নয়। এটা শুধু অসাধু ব্যবসায়ীদের কাজ।যে টিকেট মালদ্বীপে ছিলো ৬ হাজার ৩৭৫ রুপিয়া সেইটা এখন ১১ হাজার রুপিয়া এইটা আসলেই প্রবাসীদের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে এইটা বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।
মালদ্বীপে অবস্থিত বাংলাদেশ ন্যাশনাল ব্যাংকে মানি ট্রান্সফারের লোকাল ডাইরেক্টর হান্নান খান কবির, প্রবাসী সোশ্যাল ওয়ার্কার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, জাকির হোসেন।ঢাকা ট্রেডার্স এর প্রতিষ্ঠাতা মোঃ বাবুল হোসেন।,ব্যাবসায়ী,জহিরুল ইসলাম,আলিম দুররানি সহ অনেক মালদ্বীপ প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা বলেন।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ইকোনমি ক্লাসের স্বাভাবিক দুইমুখী ভাড়া ছিলো ৬ হাজার ৩৭৫ রুপিয়া যা বাংলা টাকায় পয়ত্রিশ হাজার টাকা হলেও ঈদ এলেই বেড়ে ১১ হাজার রুপিয়া হয়ে যায়। যা,বাংলা টাকায় ৫৫ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকায় হয় । এত বেশি টাকা দিয়েও এখন টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না । এতো বেশি টাকা হলে একজন সাধারণ প্রবাসী জন্য দেশে যাওয়া খুবই সমস্যা হয়ে যায়। দেশে যেতে হলে দুই মাস কাজ করে দেশে পরিবারকে টাকা ও দেশকে রেমিট্যান্স না দিয়ে টিকেট নিতে হবে।
তারা বলেন, টিকিটের মূল্য বৃদ্ধির ফলে প্রবাসী, শ্রমজীবীরা বাৎসরিক ছুটিতে দেশে যাওয়ার যাত্রীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এই সিন্ডিকেটে বন্ধ করতে হবে। যেখানে পার্শ্ববর্তী দেশে ভারতে উল্লিখিত সেক্টরগুলোতে এয়ার টিকিট মূল্য দুইমুখী টিকেট ৪ থেকে ৫ হাজার রুপিয়ার ও কম। তারা আরও বলেন, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে ঘুরতে আসা পর্যটকদের জন্য ফিরতি টিকেট সহ তিন দিন দুই রাত মালদ্বীপে হোটেল খাওয়া বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরানো হয় বাংলা টাকায় ৫০ হাজারে, সেই তুলনায় প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সাথে জুলুম করা হচ্ছে।
অনেক সাধারণ প্রবাসীরা তাদের ফেইসবুকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন পোস্টে কমেন্ট করেছেন, তার মধ্যে এমডি হৃদয় নামে একজন লিখেন আমরা তো বাংলাদেশী লোক এ জন্যই দুর্নীতি আর দুর্নীতি, আর হয়রানি হয়।। সবাই পাইল সোনার খনি ক্ষণি আমরা পাইলাম চোরের খনি ইউএস বাংলা বিমান ত্যাগ করতে হবে প্রত্যাহার করতে হবে তাহলে এই চোররা ঠিক হয়ে যাবে চালু করতে না করতে দুর্নীতি শুরু হয়ে গেছে হয়রানি শুরু হয়ে গেছে হয়রানি বন্ধ করতে হবে।তা,না হলে মালদ্বীপ বিমানই ভালো কোন হয়রানি নাই কোনো দুর্নীতি নাই
আকবর হোসেন, নামে একজন প্রবাসী লিখেন,ঈদের সময় কিছু সংখ্যক এজেন্সি গুলো যে ব্যবসা করছে,ইহা ট্রাভেলস আইনের নীতি বর্হিভুত। এজেন্সি গুলো ঠিক ঈদের সময় ই তারা এই সুযোগটি নিয়ে থাকে।প্রিয়জনদের সাথে ঈদের ছুটিতে আসতে চাইলেই টিকিটের দুলভ্য হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু বেশি দাম দিলেই টিকিট পাওয়া যায?মাননীয় প্রবাসী কল্যান মন্ত্রী, মাননীয় পযর্টনমন্ত্রী , পরিচালক বিমান কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
কামাল হোসেন লিখেন, তারা প্রথমে ৪০ কেজি লাগেজ দিয়ে শুরু করেছে এখন আবার সেই ৩০ কেজিতে ফিরে এসেছে । তারা কি আমাদের লোভ দেখিয়ে ছে? আবার ঈদ এলেই টিকিটের মূল্য বাড়িয়ে দেয়।যেখানে এখন মালদ্বীভিয়ান এ টিকিটের মূল্য দুইমুখী ৭ হাজার রুপিয়া আর ইউএস-বাংলার ১১ হাজার।তারা প্রথমে দিয়েছে এখন নিচ্ছে ।
এমডি সোহেল রানা নামে একজন লিখেন তারা মনে করে আমরা পুতুল ইচ্ছা কৃতভাবে যেটা মন চায় সেটাই করে।
এই বিষয়ে, মালদ্বীপে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের অফিসের একজন কমকর্তা এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সর্বনিম্ন ইকোনমি ক্লাসের টিকেট জুলাই মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত বিক্রি হয়ে গেছে। এখন কিছু সংখ্যক টিকেট আছে যা উচ্চতর ইকোনমিক ক্লাসের সেই টিকেট গুলো একটু দাম বেড়েছে, সর্বনিম্ন ইকোনমিক ক্লাসের টিকেট গত এক সাপ্তাহ আগেও ৬৩৭৫ রুপিয়া ছিলো। জুলাই মাসের ১০ তারিখের পরে আবার আগের দামে পাওয়া যাবে টিকেট। দাম বাড়ার কারন হিসেবে তিনি আরেকটি ইস্যু বলেছেন সেটা হলো ঈদে দেশের যাওয়ার সংখ্যা অনেকে বেড়ে যায় কিন্তু দেশ থেকে আসার সময় বিমান খালি আসে।আবার আমাদের ফ্লাইট সংখ্যা কম। তিনি বলেন শুধু আমাদের এখানে-ই না বিমান টিকেট একটু বাড়ে বিশ্বের সব দেশে কারণ যাওয়ার সময় যাত্রী নিয়ে গেলেও আসার সময় অনেক কম সংখ্যক যাত্রী হয়।
সামাজিক যোগাযোগ ফেইসবুকে মালদ্বীপ প্রবাসী বাংলাদেশিদের গ্রুপ, বিভিন্ন ভেরিফাই ফেইজ এবং আইডি ঘুরে দেখা গেছে মালদ্বীপ প্রবাসীরা কমেন্ট ও পোস্ট করে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রবাসীদের সাথে দেশি বিমান সংস্থা হয়ে ইউএস-বাংলা প্রতারণা করা হচ্ছে তাই এই প্রতারণার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।
ঢাকানিউজ২৪.কম / মোহাম্মদ মাহামুদুল/কেএন
আপনার মতামত লিখুন: