• ঢাকা
  • সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

জলঢাকায় অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ল্যাব তালাবদ্ধ


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০২:১৬ পিএম
জলঢাকায়
অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ল্যাব তালাবদ্ধ

মশিয়ার রহমান, জলঢাকা প্রতিনিধিঃ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ, জ্ঞানভিত্তিক সমাজব্যবস্থা তৈরি ও দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে প্রাথমিক স্তর থেকে আইসিটি শিক্ষার পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসাবে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছর থেকে বিভিন্ন ধাপে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিটি ল্যাবে ১৭টি ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, স্ক্যানার, প্রিন্টার, চেয়ার, টেবিলসহ প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সরবরাহ করা হয়। ল্যাবের কক্ষ অত্যাধুনিকভাবে ডেকোরেশনও করা হয়। 

এ ছাড়া ডেস্কটপও সরবরাহ করা হয়। কিন্তু অযত্ন, অবহেলা এবং প্রশিক্ষিত শিক্ষকের অভাবে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা ল্যাবের প্রকল্প ভেস্তে যেতে বসেছে। 
উপজেজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, তথ্য ও প্রযুক্তি অধিদপ্তর এ উপজেলার ১টি আইএসসি, ৩টি কলেজ, ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৪ টি মাদ্রাসায় পর্যায়ক্রমে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করেছে আইসিটি অধিদপ্তর। 

বৃহস্পতিবার  সরেজমিনে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায় অযত্ন আর অবহেলায় শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের বেহাল অবস্থা এবং অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ল্যাব তালাবদ্ধ।

শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব পাওয়া আইডিয়াল ডিগ্রী কলেজে মঙ্গলবার  সরেজমিনে  গিয়ে দেখা যায়,  ডিজিটাল ল্যাব রুমটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। একজন শিক্ষকের সহযোগীতায় তালাখুলে ল্যাবরুমে প্রবেশ করতেই দেখা যায় সেখানে ল্যাবটবগুলো এলোমেলো অবস্থায় নষ্ট হয়ে পরে আছে আর যে কয়েকটি ভালো আছে সেগুলো শিক্ষকেরা তাদের ব্যক্তিগত কাজের জন্য নিয়ে গেছে। প্রজেক্টর, স্ক্যানার মেশিন নেই।
 এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ বলেন, ল্যাব নষ্ট হউক আর ক্লাস না হউক তাতে আপনাদের কি। এসময় তিনি আরো বলেন, গত কয়েকবছর ধরে আমাদের উপরে সরকারের কোন নজড় নেই এগুলো লিখেন।

উপজেলার নেকবক্ত  উচ্চ বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব খোলা তবে এ ল্যাবে বসে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক গল্পগুজবে ব্যস্ত। ঐ স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলে সে বলেন, ল্যাবটবে কখনোই ক্লাস করেনি সে।একই বিদ্যালয়ের অন্য দুইজন শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলে তারা  বলেন, আমরা কখনোই ল্যাবে ক্লাস করিনি।উপজেলার গোপালঝাড় দ্বিমুখী  উচ্চ বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবটি তালাবদ্ধ। 

চাবি কার কাছে জানতে চাইলে অফিস সহায়ক  জাহাঙ্গীর বলেন, হেডস্যারের কাছে চাবি থাকে উনি অফিসিয়াল কাজের জন্য শিক্ষা অফিসে গেছেন।   তবে ওই স্কুলের ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ঔশ্বর্য রায় বলেন,  ল্যাব এখনো খুলেনি আর তারা কখনো ল্যাব ক্লাস করেনি।

শৌলমারি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে  গিয়ে দেখা যায়, ল্যাবের কম্পিউটারগুলো নতুন ভবনের উপরতলায় তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে । চাবি নিয়ে প্রধান শিক্ষকসহ  ল্যাবরুমে গেলে দেখা যায় ল্যাবের যন্ত্রগুলো এলোমেলোভাবে রাখা। ওই স্কুলের ৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইকবালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যারেরা ল্যাবে ক্লাস করায় না তাই করেনি। অপর এক শিক্ষার্থী অপুর্ব বলেন, ল্যাব ক্লাস হয়না তাই তারা করেনা। তবে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল বাকি বলেন, আমার ল্যাব এ্যাসিসটেন্ট নাই তথ্য প্রযুক্তির টিচার দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে ক্লাসগুলো করাচ্ছেন তিনি। 

বগুলাগাড়ি দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী দাখিল মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায় ল্যাবরুম তালাবদ্ধ। প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থীতিতে তারকাছে এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা বড্ড বাড়াবাড়ি করেন এ বিষয়ে কল দিয়েন না বলে কল কেটে দেয়।এ উপজেলা একমাত্র সরকারি স্কুল জলঢাকা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ল্যাবরুম আছে তবে ক্লাস হয় না বলে অভিযোগ করেছে অনেক শিক্ষার্থী  ।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু শিক্ষার্থীদের কাছে ল্যাবক্লাস সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, ল্যাব ক্লাস হয়না তাছারা আমাদের রুটিনে ল্যাবক্লাস নেই। 

জানা যায়, উপজেলার বেশির ভাগ ডিজিটাল ল্যাবেরই একই হাল। এ প্রসঙ্গে শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য হলো-ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে এমনটি হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনিয়ম করা হয়েছে। সরকারের এই মহৎ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হলে তদারকির বিকল্প নেই।

এ বিষয়ে জলঢাকা উপজেলা কার্যালয়ে সহকারী প্রোগ্রামার রবিউল ইসলাম বলেন, ল্যাব অযত্নে অবহেলায় রাখার সুযোগ নেই এগুলো ব্যবহার করতে হবে। এ বিষয়ে শিক্ষকদের তাগিদ দেওয়া হবে।

এ বিষয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা চঞ্চল কুমার ভৌমিক বলেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ল্যাব অপারেটর নিয়োগ দিলে এ সমস্যা হয়তোবা সমাধান হবে।  

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ময়নুল ইসলাম বলেন,  বারবার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিলো ল্যাবগুলো যেনো চালু থাকে  এগুলো যেনো নষ্ট না হয় । কিন্তু করোনার পর থেকে অনেক শিক্ষক এটার প্রতি যত্নশীল ছিলো না। সেলক্ষ্য কিছুদিন পূর্বে অধিদপ্তর থেকে একটা ট্রেনিং হয়েছে যেনো এর সঠিক ব্যবহার হয়। বর্তমান অবস্থা ভালো হওয়ার কথা কিন্তু তাও এমনটা থাকলে ক্ষতিয়ে দেখা হবে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image