বিজয়কর রতন, মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামের ফুল মিয়ার পুত্র দিন ইসলাম (২৫)কে ইতালি নেওয়ার নাম করে প্রতারক চক্র ২০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে লিবিয়ায় আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন দীন ইসলামের পরিবার।
এ ব্যাপারে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে গত ২৪ শে আগস্ট মানব পাচার আইনে জহির মিয়া নামে একজন বাদী হয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ জেলায় মানব পাচার প্রতিরোধ ট্রাইব্যুনালে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযোগকারী জহির মিয়া জানান, তার ছেলে সুজন মিয়াকে লিবিয়া থেকে ইতালি নেওয়ার নাম করে প্রতারক চক্র ১৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বর্তমানে লিবিয়ায় সুজনকে নির্যাতন করছে প্রতারক চক্র। এখন তারা আরও টাকা দাবি করছে এই মর্মে তিনি মামলা দায়ের করেছেন।
একই কায়দায় মিঠামইনের দীন ইসলাম নামে এক যুবককে ১০ মাস যাবত ৫ বার বিভিন্ন জেলে ও মাফিয়াদের নিকট আটকে রেখে বিশ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে । দীন ইসলামের স্ত্রী মর্জিনা বেগম ও তার মা আলেছা বেগম ২৭শে সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার এ প্রতিনিধিকে জানান, দীন ইসলামকে দালাল চক্র লিবিয়ায় নিয়ে আটকে রেখে ২০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এর মধ্যে হবিগঞ্জের মামলায় এ দুজন প্রতারকের নাম রয়েছে। তারা হলেন মাসুক মিয়া ও তার ভাই আশিক মিয়া তাদের বাড়ি নরসিংদী জেলার আলিপুর গ্রামে এদের মধ্যে। এদের মধ্যে মাসুক মিয়া বর্তমানে লিবিয়ায় অবস্থান করছেন তার ভাই আশিক মিয়া বাংলাদেশ থেকে টাকা পয়সা লেনদেন করছেন।
প্রথমে ১০ মাস পূর্বে বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার পর লিবিয়ায় বাংলাদেশি দালাল মাসুক মিয়ার হাতে ধরা পড়েছে এবং সে একটি গেইম দেয় কিন্তু গেইম দেওয়ার সময় লিবিয়ায় পুলিশ দীন ইসলামকে ধরে ফেলে। পরে বাংলাদেশী দালাল মাসুক কে দুই লক্ষ টাকা দিয়ে জেল থেকে ছাড়া পায়। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর পুনরায় গেইমের জন্য তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা পাঠায় সে টাকা দালাল মাসুক নেয়। আবারো গেম দিলে পুলিশ তাকে ধরে ফেলে পরবর্তীতে লিবিয়া পুলিশের মাধ্যমে ঐ দেশের মাফিয়ার নিকট দীন ইসলামকে বিক্রি করে দেয় এবং শারীরিক নির্যাতন শুরু করলে আবারো দ্বীন ইসলামের পরিবারকে ৭ লক্ষ টাকা দেওয়ার জন্য দালাল মাসুক ফোন দেয় পরে দেশে শেষ সহায় সম্বল বিক্রি করে ৭ লক্ষ টাকা বিকাশ ও ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠায়।
যার বিকাশ নং ০১৮৪৭০৭২৪৭১এর মাধ্যমে মাদারীপুরের এই নাম্বারে টাকা পাঠায় এছাড়াও ডাচ বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে আরো ৮ লক্ষ টাকা পাঠায় তাদের নিকট প্রতিটি ব্যাংকের টাকা পাঠানোর রশিদ রয়েছে। বর্তমানে সে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে প্রথমে একটি ক্যাম্পে ছিল কিন্তু আজ তিন মাস যাবত সে নিখোঁজ রয়েছে তার কোন খোঁজ নেই। দীন ইসলামের স্ত্রী মর্জিনা কান্না জর্জরিত কন্ঠে বলেন, আমার আর দেওয়ার মত কিছু নেই সব শেষ করে দেড় বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে পথে বসেছি। আমার শাশুড়ী আলেছা বেগম বর্তমানে ছেলের জন্য পাগল প্রায়। আমার স্বামীর সন্ধান চাই সরকারের নিকট এই আমার আবেদন এখনো দালাল চক্র ফোন করে বলে যে ইতালি নেওয়ার জন্য আরো টাকা দিতে হবে এ পর্যন্ত ২০ লক্ষ টাকা দিয়েছি। দেওয়ার মত এখন আর কিছু নেই শুধুমাত্র দেড় বছরের একটি কোলের সন্তান রয়েছে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: