আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলজুড়ে তীব্র দাবদাহের আশঙ্কায় দেশটির আবহাওয়া দফতর সতর্কতা জারি করেছে। প্রচণ্ড গরমে দিল্লি, রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর ও মধ্য প্রদেশের বিভিন্ন শহরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
সোমবার কোথাও কোথাও তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। তাপমাত্রা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা আবহাওয়াবিদদের।
গত কয়েকদিনের ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ রাজধানী নয়াদিল্লিবাসী। সোমবার (০৬ জুন) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। শুধু দিল্লি নয়, তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর ও মধ্য প্রদেশের বিভিন্ন শহরও। তীব্র গরম থেকে বাঁচতে ছাতার পাশাপাশি অনেকেই মুখে কাপড় বেঁধে বাইরে বের হচ্ছেন। কেউ আবার ঠাণ্ডা পানীয় ও নানা ধরনের সরবত পান করে নিচ্ছেন শীতল পরশ।
আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে আগের সব রেকর্ড। তবে, দু-একদিনের মধ্যে বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও এতে তাপমাত্রা খুব একটা কমবে না বলেও জানান তারা।
জানা যায়, এ মাসের ৪ তারিখ থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি দাবদাহের মাত্রা বাড়ছে। উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন শহরে তাপমাত্রা এরই মধ্যে ৪৪ ডিগ্রি থেকে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছি আমরা। আর তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করছি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রীস্মের শুরুতেই তাপমাত্রার এমন অস্বাভাবিক বৃদ্ধি মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। আর এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন ভারত ও পার্শ্ববর্তী পাকিস্তানের ১০০ কোটিও বেশি মানুষ।
তীব্র গরমে অতিষ্ঠ ভারতের দিল্লিবাসীর জনজীবন। ৪ জুন রাজধানী দিল্লির বিভিন্ন অংশে ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় রাজধানীর সফদরজং পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তাপমাত্রা ছিল ৪৩.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা বেশি। শুক্রবার (৩ জুন) ওই এলাকায় তাপমাত্রা ছিল ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং এর আগের দিন সেখানে তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তর-পশ্চিম ভারতের বৃষ্টি তাপমাত্রাকে সহনীয় পর্যায়ে রাখলেও তা দিল্লিতে খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। কারণ, তার গভীরতা ও তীব্রতা ছিল কম। এর মানে হলো, দিল্লির তাপমাত্রা কমানোর মতো বৃষ্টি হয়নি। ৫ জুন দিল্লির বেশকিছু এলাকায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়। আবহাওয়া অনুযায়ী আইএমডি চার ধরনের সতর্কতা জারি করে। এতে সবুজের কোনো সতর্কতা নেই। হলুদে সতর্কতা, কমলাতে জরুরি অবস্থার জন্য প্রস্তুত থাকা এবং রেড অ্যালার্টে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হয়েছে।
হঠাৎ বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়তে থাকার সঠিক কারণ জানতে গবেষণা চালিয়ে আসছিলেন বিজ্ঞানীরা। এরই ধারাবাহিকতায় এক জরিপ প্রকাশ করলো ওয়ার্ল্ড ওয়েদার এট্রিবিউশন গ্রুপ। সাম্প্রতিক সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দাবদাহের মাত্রা ৩০ গুণ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিশ্ব খুব শিগগিরই মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে বলেও সতর্ক করে সংস্থাটি।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: