• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

বাকেরগঞ্জে নির্মাণ হয়নি পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ০৩ জানুয়ারী, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৫:০০ পিএম
বাকেরগঞ্জে নির্মাণ হয়নি
পারাপারের একমাত্র ভরসাবাঁশের সাঁকো

মোঃ জাহিদুল ইসলাম, বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি, বরিশাল: বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের চৈতা বাজার ব্রিজ হতে টেংরাখালি রেজিস্ট্রি প্রাইমারি স্কুল ভায়া ইউনাইটেড হাই স্কুল আজিজ মেম্বার বাড়ির সামনে পর্যন্ত ১০৫০ মিটার  চেইনেজে বড় রঘুনাথপুর ছাব্বিশ ঘর খালের উপর ১৭ মিটার আয়রন ব্রিজ নির্মাণ কাজ পায় পিরোজপুর মঠবাড়িয়ার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নওশীন ট্রেডার্স। দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে আয়রন ব্রিজ পূর্ণনির্মাণের জন্য পূর্ণবাসন প্রকল্প আইবিআরপি প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ৩১ লাখ ৮৫ হাজার ৮১১ টাকা বরাদ্দে ব্রিজ নির্মাণ কাজের আদেশ পায়।

যাহার কার্যা আদেশ ২৬ মে ২০২২ সালে ব্রিজ নির্মাণ শুরু করে ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ সালে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু করেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। 

সরেজমিনে দেখা যায়, বড় রঘুনাথপুর খালের উপরে ব্রিজ পূর্ণনির্মাণের জন্য ঠিকাদার পুরাতন ব্রিজ ভেঙ্গে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন। নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে পথচারীরা চলাচল করছেন। নড়বর এর বাঁশের সাঁকোটি যাতায়াতে দুর্ভোগে পোহাচ্ছে ব্রিজের দুই পাশের শাকবুনিয়া, মধ্যম মহেশপুর,ছোট রঘুনাথপুর, বড় রঘুনাথপুর গ্রাম সহ পার্শ্ববর্তী নিয়ামতি, কাঁঠালতলী দুই ইউনিয়নের ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। 
স্থানীয় বাসিন্দা মোসলেম হাওলাদার জানান, বাঁশের সাঁকোই তাদের চলাচলের একমাত্র ভরসা। সরকারি প্রাইমারি, স্কুল কলেজ মাদ্রাসা সহ প্রায় ১৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করছে। বিশেষ করে বর্ষায় স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ প্রতিদিন পথচারীকে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়।

বড় রঘুনাথপুরের বাসিন্দা হোসনেয়ারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমি পীরের বাড়ি কাজ করি প্রতিদিন খুব সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই কাজে যেতে হয়। মাঝেমধ্যে নরবরে সাঁকো দিয়ে খালের মধ্যে পড়ে যাই। প্রায়ই বছর ঘনিয়ে আসছে ঠিকাদার ব্রিজটি  ভেঙ্গে ফেলেছে কিন্তু নির্মাণ কাজ শুরু করেনি। সাঁকোর ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা।

সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর শিক্ষার্থী রাসেল জানান, এই সাঁকোর ওপর দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। খুদে শিক্ষার্থীদের জন্য যেন এটা একটা মরণফাঁদ। আমি সাইকেল চালিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যাই। সাইকেলটি কাঁদে বহন করে সাঁকো পার হতে হয়। ঝুকি নিয়ে সাঁকো পার হতে গিয়ে মাঝেমধ্যে খালে পরে যেতে হয়। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নওশীন ট্রেডার্স এর প্রো: মো: শামিম সোহাগ জানান, ব্রিজের কাজ আমার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পেয়েছে। তবে আমি এখনো সরেজমিনে যাইনি। তবে ব্রিজের কাজটি আমি বেতাগী থানার বিবিচিনি গ্রামের ঠিকাদার আবুল হোসেনের কাছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রয় করেছিলাম। ৬ মাসেও সে নির্মাণ কাজ শুরু না করায় বাকেরগঞ্জের ঠিকাদার কাজি বশিরের কাছে দ্বিতীয়বার বিক্রয় করেছি। বিক্রয় নিয়ে ঠিকাদারদের মাঝে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। দশ দিনের মধ্যে সমস্যার অবসান করে ব্রিজের কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে ঠিকাদার আবুল হোসেন বলেন, নওশীন ট্রেডার্স এর প্রো: মো: শামিম সোহাগ আমার কাছে ব্রিজের কাজ বিক্রয় বাবদ দেড় লক্ষ টাকা নিয়েছেন। অধিক মুনাফা পেয়ে কাজটি দ্বিতীয় বার কাজি বশিরের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। অথচ আমাকে টাকাও ফেরত দিচ্ছে না।

এ বিষয়ে ঠিকাদার কাজি বশির জানান, নওশীন ট্রেডার্স এর প্রো: মো: শামিম সোহাগ ব্রিজের কাজ প্রথমে আবুল হোসেনের কাছে বিক্রি করেছে বিষয়টা আমার জানা ছিল না। তবে তিনি কেন ব্রিজের কাজটি এখনো শুরু করেননি এমন প্রশ্নের জবাবে জানান, পুরাতন ব্রিজটি ছিল ২১ মিটার আর এখন নতুন ব্রিজটি ১৭ মিটার নকশা করা হয়েছে। ঢাকা অফিসে আমার লোক রয়েছে ব্রিজটি ২১ মিটার করার জন্য রিভাইস করার চেষ্টায় আছি। তাই নির্মাণ কাজ এখনো শুরু করা হয়নি।

বাকেরগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া জানান, আমরা নওশীন ট্রেডার্সকে কাজটি দিয়েছি। তারা কার কাছে বিক্রি করেছে সেটা আমার জানা নেই। তবে ব্রিজটি কেন নির্মাণ হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মে মাসের পরে বর্ষা মৌসুম থাকায় খালে পানির পরিমাণ বেশি ছিল তাই ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়নি। 

স্থানীয়রা এখানে ব্রিজটি নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারের উদাসীনতায় ব্রিজটি নির্মাণ শুরু হয়নি। এছাড়াও তিন ঠিকেদারের ঠেলা ঠেলিতে ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় স্কুলশিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সেতু নির্মিত হলেই এলাকাবাসীর জন্য যাতায়াতব্যবস্থাসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন নতুন সুযোগের সৃষ্টি হবে।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image