• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে ঘিরে চরম অসন্তোষ


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ২২ আগষ্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৭:০৪ পিএম
প্রধান প্রকৌশলীকে ঘিরে অসন্তোষ
গণপূর্ত অধিদপ্তর

ডেস্ক রিপোর্টার: গণপূর্ত অধিদপ্তরের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তারের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অদক্ষতার বিভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে । দায়িত্ব পালনের দুই বছরের মাথায় প্রধান প্রকৌশলীর শামীম আক্তারের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ এসেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো তিনি একটি বিশেষ খানকা শরীফের পীর সাহেব। নারায়ণগঞ্জের ভুইঘরের হাকিমাবাদ খানকা-ই-মোজাদ্দেদিয়ার পীর সাহেব হিসেবে খ্যাত আল্লামা হযরত মোহাম্মদ শামীম আক্তার। এ খানকা কে ঘিরে দেশব্যাপী রয়েছে তার অসংখ্য মুরিদ। অভিযোগ রয়েছে যে হাউজিং এন্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট (এইচবিআরআই) এর সাবেক মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালনের সময় শামীম আক্তার এইচবিআরআইতে তার মুরিদদের নিয়ম বহির্ভূতভাবে সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন।

২০২০ সালে ডিসেম্বর মাসে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে যোগদানের পর তার মুরিদানরা গনপুর্ত অধিদপ্তরের গণপূর্ত প্রশিক্ষন একাডেমী, পুর্ত ভবনে উন্নয়ন, প্রধান প্রকৌশলী বাসভবন সংস্কারসহ একাধিক প্রকল্পের কাজ পেতে শুরু করেন। এ নিয়েই গনপূর্তের ঠিকাদার সমিতি ও মুরিদানদের মধ্যে এক ধরনের অসম প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এর ধাক্কা গিয়ে পড়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়সহ অন্যান্য অফিসগুলোতে। ইতোমধ্যে এইচবিআরআই তদন্তে মুরিদদের ঠিকাদারির নানা সুযোগ সুবিধা প্রদানসহ আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের সু-নির্দিষ্ট অভিযোগ সম্প্রতি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে।

মূলত এইচবিআরআই  ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, খানকার মুরিদদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন পীর সাহেব। সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনে এ অধিদপ্তরের কোটি কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ নিয়ম ভেঙ্গে মুরিদদের দিচ্ছেন এই প্রধান প্রকৌশলী।

২০১৯ সালের এপ্রিলে ‘নন ফায়ার ব্রিক প্লান্ট’  নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কিংডম বিল্ডার্সের সঙ্গে চুক্তি করে এইচবিআরআই। আইন অনুযায়ী, ১০ থেকে ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ প্রকল্পের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হয়। এক্ষেত্রে তা করা হয়নি। এমনকি এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে এইচবিআরআইয়ের বাজেটও নেই। এরপরও ‘নন ফায়ার ব্রিক প্লান্ট’ নির্মাণের প্রায় ১৪ কোটি টাকার কাজ কিংডম বিল্ডার্সকে দেন সংস্থাটির তৎকালীন মহাপরিচালক, যার কাজ এখনো শুরু হয়নি। কিংডম বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নুসরত হোসেনকে পীর সাহেবের ঘনিষ্ঠ মুরিদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এইচবিআরআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে। কিংডম বিল্ডার্স, কিংডম হাউজিং, কিংডম কনস্ট্রাকশনসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার নুসরত হোসেন।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে এইচবিআরআইয়ের গবেষণা খাতে ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। গবেষণা খাতের এ টাকা থেকে ১ কোটি ১১ লাখ টাকায় ‘অটোমেটিক বøক মেকিং প্লান্ট’ স্থাপন করা হয় এবং এ কাজও পায় কিংডম বিল্ডার্স। ঠিকাদারকে সব বিল প্রদান করা হলেও প্লান্টটির কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। এ ধরনের কাজ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সংস্থার অভিজ্ঞ ব্যক্তি বা প্রকৌশলীদের নিয়ে কমিটি গঠনের নিয়ম থাকলেও সে ধরনের কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি।

অন্যদিকে একই প্লান্টের শেড নির্মাণের জন্য ৭০ লাখ টাকার কাজে কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়াই কিংডম বিল্ডার্সকে নিযুক্ত করা হয়। অর্ধকোটি টাকায় একই কাজ আরেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অর্থি এন্টার প্রাইজকে দেয়া হয়, যার মালিক আল আমীনকেও পীর সাহেবের মুরিদ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এইচবিআরআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে।

নিয়মবহির্ভূতভাবে ঠিকাদারি কাজ পাওয়া ছাড়াও রিসার্চ আর্কিটেক্ট, সিনিয়র ড্রাফটসম্যান, সহকারী মেকানিক, পেইন্টার, বাবুর্চি, মালিসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ পেয়েছেন মুরিদরা। মোহাম্মদ শামীম আখতারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে এইচবিআরআই ও দুর্নীতি দমন কমিশনে একাধিক চিঠিও দিয়েছেন এইচবিআরআইয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

কিংডম বিল্ডার্স, অর্থি এন্টারপ্রাইজ ও জামান বিল্ডার্স মুলত প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তারের আস্থাভাজন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলে একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেছে। কিংডম বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নুসরত হোসেন পীর সাহেবের ঘনিষ্ঠ মুরিদ হিসেবে এইচবিআরআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হযছে। কিংডম বিল্ডার্স, কিংডম হাউজিং, কিংডম কনস্ট্রাকশনসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার নুসরত হোসেন।

মূলত গণপূর্ত অধিদপ্তর সরকারী অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে থাকে। বর্তমানে শামীম আক্তারের সমস্ত কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রন ও ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করে একজন নির্বাহী প্রকৌশলী – এ অভিযোগ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image