• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

আদমপুর মা ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেড় লক্ষ লোক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০১:৫৪ পিএম
মা ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা থেকে বঞ্চিত
আদমপুর মা ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্র

বিজয়কর রতন, মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: অষ্টগ্রাম উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নে ১৯৬৫ই সালে ৪২ শতাংশ জায়গা নিয়ে মা ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি প্রতিষ্টিত হলেও বিগত ২০বছর যাবত পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। জানা যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে পূর্বে একজন মেডিকেল অফিসার ডা: মো শিব্বির আহম্মেদ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলেও তিনি অবসরে যাওয়ার পর আর কোনো ডাক্তার না থাকায় অধ্যবধি সময় পর্যন্ত পরিত্যক্ত রয়েছে। বেশ কিছুদিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভেতরে অস্থায়ী লোকজন ব্যবসা পরিচালিত করতে দেখা গেছে, বর্তমানে তার চারপাশ ঘিরে অসংখ্য ব্যবসায়ীদের স্থায়ীভাবে ব্যবসা রয়েছে। যে ইউনিয়নে লোকসংখ্যা বসবাস রয়েছে প্রায় ৫০হাজারের অধিক।

অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে আদমপুর হাওর ইউনিয়নের দুরত্ব প্রায় ২০কিলোমিটার স্থলপথ ও নৌপথ। আর এসকল লোকজনের জন্য রয়েছে একটি মাত্র স্বাস্থ্যকেন্দ্র যা বিগত ২০বছর যাবত পরিত্যক্ত। অন্যদিকে আদমপুরের পাশ্ববর্তী আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নে কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্র না থাকায় আদমপুর থেকে একসময় চিকিৎসা নেওয়া হত, যেখানে প্রায় দেড় লক্ষ জনগনের সেবার উপর নির্ভর করে এই হাসপাতাল। হাসপাতালের ভেতরে আর বাহিরে এখন ময়লা আর আবর্জনা স্তুপ, বাজারের লোকজনের পয়Ñনিস্কাশনের কারনে ভেতরে প্রবেশ করা যায়না।

এবিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার জনাব শামসুল আলম জানান, হাসপাতালের বিষয়ে তিনি অবগত কিন্তু প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আদমপুর ইউনিয়নের দায়িত্বে একজন এফডবিøওভি দীপা আক্তার বদলী হয়ে গেছে আর একজন নিরাপত্তা প্রহরী ছিল সে ডেপুটেশনে আছে। তাদের স্থলে বর্তমানে কেউ না থাকায় ইউনিয়নটি শূন্য রয়েছে।

তবে অচিরেই একজন এফডবিøওভি দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। কালের আবর্তে আর হাসপাতালের চারপাশ অবৈধ দখলধারী ব্যবসায়ীদের কারনে হয়ত অনেকেই ভূলে গেছে যে আদমপুর একটি মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুল মোন্নাফ বলেন, আদমপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দীর্ঘদিন যাবত চিকিসা: সেবা নেই এবং এব্যাপারে কতৃপক্ষেরও কোনো সু-দৃষ্টি নেই। এ বিষয়ে মাননীয় সাংসদকে বার বার অবগত করেছেন। তবে তিনি তার দ্রæত ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বাস দেন। বিগত ২০বছর যাবত তার ইউনিয়নের মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত। নিরুপায় হয়ে চিকিৎসার জন্য হবিগঞ্জ জেলা সদরে যেতে হচ্ছে। এতে বিপুল অর্থনৈতিক ব্যয় ও হয়রানির স্বীকার হতে হয় অসুস্থ্য রোগীদের।

আদমপুর ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রটি হাওরের তিনটি ইউনিয়নের জনগন ছাড়াও পাশ্ববর্তী হবিগঞ্জ জেলার অন্তর্গত মাদনা, পূর্ব বাজুকা, ফরিদপুর সহ সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজন সুবিধা পেত। আদমপুরের দখলদার কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর সাথে কথা হয়  তারা হলেন বাদল মিয়া, শহিদ মিয়া, বকুল মিয়া, ইকবাল মিয়া, সুমিতা বেগম, আঃ রশিদ, মিজান মিয়া, আক্তার মিয়া, শওকত আলী, তারা জানান, আদমপুরের সাবেক চেয়ারম্যান জনাব ফজলুল করিম বাদল কে ঘর বাবত ভাড়া প্রদান করেছেন প্রতিমাসে এক হাজার টাকা করে করে থাকেন। আবার কেউ খালি জায়গা থাকায় নিজ উদ্যেগে ঘর তুলে ব্যবসা করছেন। তারা কাহাকেও কোন ভাড়া দিচ্ছেননা। তাদের মধ্যে ব্যবসায়ী সুলতান মিয়া জানান, রায় যার পক্ষে আসুক আমরা তার কাছ থেকে জায়গা নিব। এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার পরিবার পরিকল্পনার উপ-পরিচালক এ,এম,খাইরুল আমিনের সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আদমপুর মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি এখনো পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হয়নি। এবং হাসাপাতালের ৩শতাংশ জায়গা নিয়ে মামলা প্রক্রিয়ধীন। তবে তিনি স্বীকার করেন, অবৈধ ব্যবসায়ীদের, অচিরেই মামলার রায় পেলে, নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট বসিয়ে উচ্ছেদ করা হবে।

তিনি আরও জানান, আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র ১০শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতালের অনুমোদন হয়ে গেছে। তার কাজের বাস্তবায়নও খুব দ্রæত করা হবে। এ ব্যপারে একজন দখলদার ফজলুল করিম বাদল বলেন, দখলকৃত ৩শতাংশ জায়গা তাদের ক্রয়সূত্রে মালিকানা সহ ৪২ শতাংশ জায়গা সরকারের নামে মাট জরিপ রয়েছে। তিনি ৩শতাংশের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে সরকারের সাথে দেওয়ানী মামলায় লড়ছেন এবং সরকার চাইলে যেকোনো সময় দিতে রাজি আছেন। ফজলুল করিম বাদল আরও জানান জায়গাতে বিভিন্ন দখলদাররা দোকান ভাড়া ও ঘর তোলে ব্যবসা করছেন।

ইতিমধ্যে আদমপুরের শহীদ মিয়া গং-দের নামে ১৭ শতাংশ জায়গা বাজিতপুর সহকারী জজ আদালত কতৃক রায় নিয়ে ভোগ দখল করে আসছেন। সাধারন জনগনের একমাত্র মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি এভাবে বেদখল হয়ে গেলে ভূক্তভোগী রোগীদের ভূগান্তির চরমে পর্যায়ে পৌছে যাবে। তাই হাওরের এসকল জনগনের দু:খ দূরর্দশা লাগবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পূনরায় চালু করতে ও দখলমুক্ত করার জন্য প্রশাসনের উর্ধতন কতৃপক্ষের শুভ দৃষ্টি ও বাস্তবায়নের দ্রæত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

এব্যাপারে অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হারুন অর রশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি অবগত নন। পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথ কথা বলে ব্যাবস্থা নিবেন।
 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image