• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

স্বপ্নের মেট্রোরেল,মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় উচ্ছ্বসিত জনতা


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৬:০০ পিএম
উচ্ছ্বসিত,জনতা
স্বপেনর মেট্রোরেল

মোহাম্মদ রুবেল

উচ্ছ্বসিত জনতার বিস্মিত দৃষ্টির সামনে দেশের রাজধানীর আকাশে চূড়ান্তভাবে পাখা মেলবে স্বপ্নের মেট্রারেল।যা এখন দেশবাসীর কাছে স্বপ্ন নয় বাস্তব চিত্র।সেই চিত্র আর একদিনই পরই নতুন ভোরের তপ্ত লাল সূর্যভেদ করে সাধারণ মানুষের চোখের সামনে ঘুড়ে বেড়াবে মেট্রোরেল।সেই মাহেন্দ্র ক্ষণের অপেক্ষায় এখন উচ্ছ্বসিত জনতার বিস্মিত চোখ।সেই এই ক্লান্তি চোখের অবসান হতে যাচ্ছে আগামীকাল বুধবার।এইদিন উন্নয়ন অগ্রযাত্রার স্বপ্নের সারথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই বেলা ১১টায় উদ্বোধন হচ্ছে নতুন দিগন্তের।তিনিই হতে যাচ্ছেন মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রি।

এ প্রেক্ষিতে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি ।প্রথম ধাপে ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট খুলে দেওয়া হবে।

সাধারণ মানুষের ভাবনায় মেট্রোরেল চালু হলে গণপরিবহণের অভাব অনেকাংশেই দূর হবে।বাঁচবে মূল্যবান সময়ও।তবে উত্তর-দক্ষিণ পথে চলাচলকারীরাই সুফল বেশি পাবেন।কারণ মহানগরীতে উত্তর-দক্ষিণমুখী সড়ক তুলনামূলক বেশি,আবার মেট্রোরেলও উত্তর-দক্ষিণমুখী।

মেট্রোরেলের নিরাপত্তা

পুলিশ সদর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান,প্রাথমিক পর্যায়ে ‘এমআরটি পুলিশ’নামে বিশেষায়িত ইউনিটটির সদস্য সংখ্যা হবে ৩৫৭ জন।নিরাপত্তা ও দাপ্তরিক কাজে ব্যবহার করার জন্য এ ইউনিটের সদস্যরা ২১টি যানবাহন পাবেন।ইউনিটটির দায়িত্বে থাকবেন পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক পদ মর্যাদার একজন কর্মকর্তা।এছাড়া থাকবেন একজন অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক,একজন পুলিশ সুপার, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ৭ জন ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র),একজন ইন্সপেক্টর (সশস্ত্র), ৬ জন উপ-পরিদর্শক (এসআই), ৫১ জন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই),১০ জন নায়েক, ২৭০ জন কনস্টেবল, একজন হিসাবরক্ষক, একজন উপ-সহকারী হিসাবরক্ষক ও একজন কম্পিউটার অপারেটরসহ মোট ৩৫৭ জন।

দুই টিকিট পাবেন যাত্রীরা

ডিএমটিসিএলের তথ্যানুসারে,মেট্রোরেলের এমআরটি ৬ লাইনে যাত্রীরা দুই ধরনের টিকিটে চলাচল করতে পারবেন।প্রথমটি সিঙ্গেল জার্নির জন্য।দ্বিতীয়টি এমআরটি পাস (পারমানেন্ট টিকিট)পারমানেন্ট জার্নির জন্য।সিঙ্গেল যাত্রী টিকিট কেটে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌছারপর টিকিটটি স্টেশনের স্বয়ংক্রিয় দরজায় জমা দিয়ে আসতে হবে।অন্যথায় দরজা খুলবে না।ফলে যাত্রী স্টেশন থেকে বের হতে পারবে না।আর স্থায়ী পাস নিয়ে যারা চলবেন তাদের বারবার টিকিট কাটতে হবেনা।একবার টিকিট কিনে মোবাইলের মতো বারবার রিচার্জ করে চলতে পারবেন।সুবিধা হলো এই যাত্রীকে প্রত্যেকবার স্টেশনে টিকিট জমা দিতে হবে না।এটি যাত্রীর কাছেই সংরক্ষিত থাকবে।

যেভাবে নিতে হবে টিকিট

প্রথমদিকে শুধু স্টেশনের কাউন্টার থেকে ইস্যু করা এমআরটি পাস রিচার্জের মাধ্যমে।এছাড়া স্টেশনের কাউন্টার কিংবা টিকিট বিক্রয় মেশিন থেকে নির্দিষ্ট যাত্রার টিকিট (সিঙ্গেল জার্নি টিকিট) কেনা যাবে।পরবর্তী সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস দিয়েও এমআরটি পাসের টাকা রিচার্জ করা সম্ভব হবে।বিক্রয় মেশিনের মাধ্যমে টিকিট কাটতে হলে প্রথমে যাত্রীদের মনিটরে বাংলা অথবা ইংরেজি ভাষা নির্বাচন করতে হবে।পরে সিঙ্গেল ও পারমানেন্ট জার্নির জন্য টিকিট নির্বাচন করতে হবে। এরপর যাত্রীদের গন্তব্যের তালিকা অপশনে গিয়ে সেখান থেকে যাত্রীকে তার গন্তব্য স্টেশন নির্বাচন করতে হবে। টিকিটের সংখ্যা নির্ধারণ করত হবে।সিঙ্গেল জার্নির জন্য একজন যাত্রী একবার যাত্রায় পাঁচটির বেশি টিকিট কাটতে পারবে না। এরপর ওকে বাটনে চাপ দিলেই মেশিন টাকা চাইবে।টাকা দিলেই টিকিট বেরিয়ে আসবে। মেশিনে সর্বনিম্ন ২০ টাকা আর সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা প্রবেশ করানো যাবে।

সাধারণ মানুষের অভিযোগ

ঢাকার মেট্রোরেলের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা;সর্বোচ্চ ১০০। ট্রেনে ৩ বছরের কম বয়সের শিশুর ভাড়া লাগবে না।কিন্তু শুরুতে এই সুবিধা না থাকায় সাধারণ মানুষের অভিযোগ,সব শিশুর জন্য ভাড়া গুনতে হবে প্রাপ্তবয়স্কদের সমান।অথচ বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রেও শিশুদের জন্য ছাড় থাকে,সেখানে রেলের টিকিটে ছাড় না থাকা দুঃখজনক।

কাজের অগ্রগতি ও যাত্রী সেবা

উদ্বোধনের প্রথম দিন থেকেই পুরোপুরি সেবা দিতে পারবে মেট্রোরেল।উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত স্টেশনের এক্সিট এন্ট্রির কাজ শেষ হয়েছে।ইতিমধ্যে আগারগাঁও পর্যন্ত বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়া হয়েছে।মতিঝিল পর্যন্ত রেলওয়ে ট্র্যাক বসানো হয়েছে।

সংস্থাটির এমডি বলছেন,২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মতিঝিল পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল।২০২৫ সালের জুনে চলবে কমলাপুর পর্যন্ত।সার্বিক অগ্রগতি ৮৪ দশমিক ২২ শতাংশ।পরিকল্পনা অনুযায়ী,সাড়ে তিন মিনিট অন্তর ট্রেন চলবে।এক থেকে দুই মিনিট যাত্রাবিরতি দেওয়া হবে।১০টি ট্রেন দিয়ে শুরু হবে যাত্রী পরিবহন।ব্যাকআপ হিসেবে ডিপোতে জনবলসহ আরও দুটি ট্রেন থাকবে।

এমডি বলেন,প্রতিটি ট্রেনে রয়েছে ছয়টি বগি।প্রথম ও শেষের বগিতে থাকবে ট্রেন পরিচালনার মডিউল।ফলে না ঘুরিয়ে ট্রেন চালানো হবে।মূলত ট্রেন চলবে সফটওয়্যারে।প্রতিটি ট্রেন একসঙ্গে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৩০৮ জন যাত্রী পরিবহন করতে পারবে,যা ৪৪টি বাসের যাত্রীর সমপরিমাণ।

মেট্রোরেলের ভাড়া

যাত্রীপ্রতি ভাড়া ১০০ টাকা।সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা।২০ টাকায় দুই স্টেশন ভ্রমণ করা যাবে।দিয়াবাড়ী-আগারগাঁওয়ের ভাড়া ৬০ টাকা।সময় লাগবে ২০ মিনিট। পুরোদমে অপারেশন শুরু হলে ১৬-১৭ মিনিট লাগবে।স্মার্টকার্ডে ভাড়া পরিশোধ করলে ১০ শতাংশ ছাড় রয়েছে।মোবাইল রিচার্জের মতো রিচার্জ করা যাবে স্মার্টকার্ড। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও রিচার্জ করা যাবে।এ ছাড়া স্টেশনেও টিকিট মিলবে।

ট্রেনের ব্যয়

২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরে মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। তা বেড়ে হয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ঋণ দিচ্ছে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল লাইন বর্ধিত করা, ওঠানামার স্টেশনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ এবং স্টেশনগুলো ঘিরে ট্রান্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্টে (টিওডি) ১১ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা ব্যয় বেড়েছে।

 

 

 

 

ঢাকানিউজ২৪.কম / এম আর

আরো পড়ুন

banner image
banner image