• ঢাকা
  • রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৫ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

মরার আগেই আমার বাবাকে আপনারা মেরে ফেলেছেন: উপাচার্যের মেয়ে


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১২:২৩ পিএম
মরার আগেই আমার বাবাকে আপনারা মেরে ফেলেছেন
জবি'র প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের মেয়ে তাসলিম হক মোনা

জবি প্রতিনিধি : জীবিত থাকা অবস্থায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হককে শিক্ষক সমিতি মেরে ফেলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন তার একমাত্র সন্তান তাসলিম হক মোনা। একই সাথে উপাচার্যের অসুস্থতার মধ্যেই শিক্ষক সমিতি পক্ষ থেকে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

বুধবার (১৫ নভেম্বর) প্র‍য়াত উপাচার্যের স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে শোকসভা আয়োজন করা হয়। সভায় বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষোভ প্রকাশ করে তাসলিম হক মোনা এসব কথা বলেন। 

এসময় তিনি বলেন, জীবিত থাকা অবস্থায় আমরা যেসব মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে গেছি সেটা আসলে অবর্ণনীয়। উনি সুস্থ থাকা অবস্থায় উনার অক্ষমতা দেখিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাবা আইসিউতে গিয়েছেন মাত্র একদিন হয়েছিল তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে আমি জানতে পারি বাবা ৫দিন ধরে আইসিউতে আছেন এমন একটি সংবাদ ছড়ানো হচ্ছে জবি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে৷ এটাত এক প্রকার এমন বিষয় যে বাবা জীবিত থাকা অবস্থায়ই বাবাকে মেরে ফেলেছে শিক্ষক সমিতি।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ফোন দিয়ে চার্জ করা হয়েছে, যে উনার আসলে কি অবস্থা। উনারা কি আসলেই জানতেন না কি অবস্থা? এমন পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষক সমিতি নিজেদের মধ্যে থেকে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করে, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমাদেরকে হয়রানি করার জন্যই এমনটাই করেছেন জবি শিক্ষক সমিতি। উনারা মনে করেছিল আমরা মেয়ে মানুষ, হুমকি দিয়ে কথা বললে চুপ হয়ে যাবো। তখন যারা সহযোগিতা করেছেন আমি তাদের কাছে সবসময় কৃতজ্ঞ থাকবো মন থেকে। 

বাবা বেঁচে থাকায় অবস্থায় বলেছিলেন শিক্ষকতা একটি মহান পেশা৷ কিন্তু এ পেশার কিছু মানুষের এমন অসুস্থ মানসিকতা হতে পারে সেটা ভাবিনি৷ তারপরও আমি কিছু বলতে চাইনি কারণ এক হাতে পাঁচটা আঙ্গুল সমান হয়না। তবে এমন অসুস্থ মানসিকতার শিক্ষকদের মধ্যেও কিছু ভালো মানুষ ছিলেন যারা আমাদের সবসময় সহযোগিতা করে এসেছিলেন।

তাসলিম হক মোনা বলেন, বাবা সিন্ডিকেট সভা করার অনেক চেষ্টা করেছিলেন এত শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির লোকজন সিন্ডিকেট সভা পেছানোর জন্য আমাদেরকে  বারবার চিঠি দিয়েছিলেন। 

তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, শেষের দিকে বাবা যেসব নির্দেশনাগুলো দিয়েছিলেন সেগুলোর সত্যতা নিয়েও এখন প্রশ্ন তোলা হচ্ছে৷ তার মানে আপনারা আপনাদের ভিসি স্যারকে বিশ্বাস করেন না। 

বাবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে তাসলিম হক মোনা বলেন, কোন মানুষই ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। আমার বাবাও একজন মানুষ। তিনি কোন ভুল করে থাকলে আপনারা ক্ষমা করে দিবেন। আপনাদের অনেক আক্ষেপ আছে আমি জানি৷ অনেকের প্রমোশন হয়নি বা অনেক কিছুই হয়নি। এটা নিয়ে অনেকে আক্ষেপ সেটার সংবাদ আমাদের কাছে এসেছে । তিনি অসুস্থতার মধ্যেও অনেক চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কিছু পারেন নি। আমার বাবাকে আল্লাহ যেন বেহেশতে নসীব করেন সেজন্য সবাই দোয়া করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং হামদ ও নাত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শোকসভা শুরু হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান শোক প্রস্তাব পাঠ করেন৷ 

শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ। এসময় প্র‍য়াত জবি উপাচার্যের সহধর্মিণী নুরুন নাহার বেগম উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডীন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, প্রক্টর, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট, জবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন, কর্মচারী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ অন্যরা।

বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image