
নিজস্ব প্রতিবেদক : চেষ্টা আর অদম্য ইচ্ছা শক্তি বদলে ফেলতে পারে জীবনের মোড়, আবারো প্রমাণ করে দিলেন ঢাকার সফল ফ্রিল্যান্সার মোঃ মিজানুর রহমান (মিজান)। তার বক্তব্য, সফলতা কখনো হেঁটে হেঁটে আসেনা, ধীরে ধীরে সফলতার ভীত রচনা করতে হয়। আর তবেই দেখা মিলে অন্ধকার জীবনে এক ফোঁটা সূর্য রশ্মীর। তার বিশ্বাস– সময়ের সাথে সাথে তিনি একদিন দেশের সেরা হয়ে উঠবেন এবং তার সফলতার গল্প বর্তমান তরুণ সমাজের অনুপ্রেরণার কারণ হতে পারে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন– মোঃ মিজানুর রহমান (মিজান)।
ফ্রিল্যান্সিং জীবনের সূচনা:
মোঃ মিজানুর রহমান এর ভাষ্যমতে ২০০৫, সবেমাত্র ভার্সিটি লাইফে পা রাখা। এরই মধ্যে প্রথম ক্যারিয়ার হিসাবে তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্রে, একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান বারি স্টুডিওতে চাকরি জীবন শুরু করেন। বারি স্টুডিওতে তিনি টানা ২ বছর সাফল্যের সাথে চাকরি করেন । এরপর দ্বিতীয় ক্যারিয়ার হিসাবে তিনি 'তারা বাংলা' চ্যানেলে যোগদান করেন। মাত্র ৬ মাস চাকরি করার পরে সেখান থেকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রে তিনি কিছুদিন কাজ করেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র থেকে তিনি সিএসবি নিউজে যোগদান করেন। সিএসবি নিউজে তিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাফল্যের সাথে চাকরি করেন। হঠাৎ করে তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সিএসবি নিউজ চ্যানেল বন্ধ হয়ে যায়, কিছুদিন পরে আবার তিনি বৈশাখী টেলিভিশনে যোগদান করেন।
মোঃ মিজানুর রহমান বৈশাখী টেলিভিশনে প্রায় ১২ বছরের উপরে সাফল্যের সাথে সাংবাদিকতা পেশায় কাজ করেছেন । আর এই সাংবাদিকতা পেশার পাশাপাশি মোঃ মিজানুর রহমানের হঠাৎ করেই সখ হলো একজন ফ্রিলান্সার হওয়ার। আর সাংবাদিকতা পেশার পাশাপাশি এই ফ্রিল্যান্সিং করার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় মোঃ মিজানুর রহমান ২০ হাজার টাকা দিয়ে এস.ই.ও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) কোর্স সম্পূর্ণ করেন। আর এই কোর্সটি করেন তারই একজন সিনিয়র কলিগের কাছে, আর তারই পরামর্শ অনুযায়ী তিনি foodrecipeblog.com নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরী করেন। সেই ওয়েবসাইটের জন্য জন্য তিনি টাকা দিয়ে ডোমেইন হোস্টিং কিনে নিয়েছেন। রাত দিন পরিশ্রম করে এক এক করে ৪২ টা আর্টিকেলও পোস্ট করেন। প্রতিটি আর্টিকেল ইংলিশে লিখতে হয়েছে। অবশ্যই ১০০% ইউনিক আর্টিকেল হতে হয়েছে। এভাবে এক টানা ৪ মাস যাবত তিনি ওয়েবসাইট নিয়ে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। হঠাৎ একদিন তার ট্রেইনার তাকে বলে এখন আর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোন ইনকাম নেই। এই কথা শোনার পরে মোঃ মিজানুর রহমানের মনটা ভেঙে গেলো। তিনি বলেন. আমি এই ওয়েবসাইটের জন্য যে ইনভেস্টমেন্ট ও পরিশ্রম করেছি সেটার হিসাব করলে প্রায় ২ লক্ষ টাকার উপরে হবে। অবশেষে তার ওয়েবসাইট নিয়ে আর সামনে আগানো হলো না। এরপর তিনি ফাইবার ও ওডেস্ক মার্কেট প্লেসে কাজ শুরু করেছেন। সেখানেও কিছু বায়ার নতুন পেয়ে বিনা পয়সায় খাটিয়ে নিতো পেমেন্ট দিতো না। এরমধ্যে চট্রগ্রামের একজন নামকরা ফ্রিলান্সার ট্রেইনার থেকে তিনি কোর্স সিডি কিনে কাজ শুরু করেন। তাতেও কোন সুফল পাইনি। এই রকম নাকি আরও কিছু অনলাইন থেকে তিনি ফ্রিল্যান্সিং করার কোর্স সিডি কিনেও কোন ইনকামের ভাল সোর্স পাইনি। এভাবে সাংবাদিকতা চাকরির পাশাপাশি ভেঙে পড়া মন নিয়ে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন। মাঝে মধ্যে এভাবে চেষ্টা করতে করতে ব্যার্থ হয়ে ফিরে এসে সর্বশেষ এটাই ভাবতেন, যে আমাকে দিয়ে হয়তো আর কখনো ফ্রিল্যান্সিং করা হবে না। মাঝে মধ্যে কোন কাজ ছাড়াই ল্যাপটপ কম্পিউটার নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা তিনি বসে কাটাতেন। আর এতে ওনার বাসার লোকজনও ওনার উপরে বিরক্ত হয়ে যেতো। আর বলতো অযাথা বিভিন্ন যায়গায় এভাবে টাকা নস্ট করে সময় নস্ট করে কি লাভ হলো। আর তার মতে সাংবাদিকতা পেশা শুধুই নামে মাত্র তেমন কোন সুন্দর ভবিষ্যৎ নেই। আর তাই অনেক সখ হয়েছিলো যে তিনি একজন সফল ফ্রিলান্সার হবে।
এভাবে তার ২০১৬ সাল থেকে শুরু ফ্রিল্যান্সিং স্বপ্নযাত্রার চাকা ঘুরতে ঘুরতে ২০২১ সালে এসে পৌঁছেছে। ফ্রিল্যান্সিং যারা করেন অর্থাৎ অনলাইনে যারা কাজ করেন তারা সকলেই কম বেশি জানেন নেটেলার, স্ক্রিল, পেজা, পেপল, পেওনার ও পারফেক্ট মানি অ্যাকাউন্ট গুলো সম্পর্কে। আর এভাবে হঠাৎ একদিন মোঃ মিজানুর রহমান ইউটিউবে নেটেলার স্ক্রিল লিখে সার্চ করেন। ফ্রিল্যান্সিং এর উপরে বিভিন্ন ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখা শুরু করেন। এভাবে ইউটিউবে সার্চ করতে গিয়ে একজন বড় মাপের ইউটিউবরের সাথে মিজানের পরিচয় হয়। আস্তে আস্তে তার সাথে একটি ভাল ফ্রেন্ডশীপ গড়ে উঠে। আর তারই পরামর্শ অনুযায়ী মোঃ মিজানুর রহমান অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং এর নতুন অধ্যায় শুরু করেন। আর কোথাও সুযোগ না পাওয়া ছেলেটি সর্বশেষ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী এলাকায় একজনের সাথে তার বন্ধুত্ব সম্পর্ক হয়। আর তার সেই বন্ধুর কাছ থেকে সহোযোগীতা নিয়েই ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে এগিয়ে যান। একমাত্র এই তার সেই বন্ধুর সহোযোগীতা নিয়েই আজ (মিজান) একজন সফল ফ্রিলান্সার। মিজান বলেছেন, শুভ আমাকে প্রতিটি স্টেপ হাতে ধরে ধরে শিখিয়েছেন। আমার এমন একটি সংকটাপন্ন মূহুর্তে প্রিয় বন্ধুর এই সহোযোগীতা আমার পুরো জীবনটাকে একটি নতুন অধ্যায় দাড় করিয়ে দিয়েছে। বন্ধু শুভুর সাথে পরিচয়ের শুরুতেই তাকে আমি ছোট্ট একটি উপকার করেছিলাম বলেই দ্রুত তার বিশ্বস্ত বন্ধু হতে পেরেছি। মিজান বলেন, সাংবাদিকতা পেশায় আমরা যতো পরিশ্রম করি তার পারিশ্রমিক ততোটা ভাল নয়। তাই এই ক্যারিয়ারের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। প্রতিটি বাবা মা'রই স্বপ্ন থাকে ছেলে বড় হয়ে ভাল কিছু করবে।
মিজান তার বন্ধু কে নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার কে আরো সুন্দর করার লক্ষ্যে ফেসবুক মার্কেটিং, ইউটিউব মার্কেটিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, সিপিএ মার্কেটিং ও গ্রাফিক্স ডিজাইন সহ বেশ কয়েকটি কোর্স সম্পূর্ণ করেন।
পরবর্তীতে নিজের অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর রিসার্চের মাধ্যমে তিনি একের পর এক প্ল্যাটফর্ম খুঁজে বের করেন এবং টেকনিক খাটিয়ে প্রতিটা বিষয় স্কিল অর্জন করেন এবং সফলতা নিয়ে আসেন। তিনি একাধারে একজন ইউটিউবার, আবার একাধারে একজন ফ্রিল্যান্সার। ইতিমধ্যে মিজান ও তার বন্ধু শুভ সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে বাংলদেশ সরকারের ICT Division Bangladesh Government এর তালিকায় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসাবে সিলেক্টেড হয়েছেন ও আইডি কার্ড পেয়েছেন।
ব্যক্তিগত জীবন:
ফ্রিল্যান্সার মোঃ মিজানুর রহমানের জন্মস্থান বরিশাল জেলার বাখেরগঞ্জে। ছোট থেকে এস এস সি পর্যন্ত বেড়ে ওঠা সেখানেই। বর্তমানে মিজান ঢাকায় অবস্থান করছেন। বর্তমানে পরিবারের রয়েছে তার মা এবং ভাইরা। ভাইদের সংখ্যা চার জন, কোন বোন নেই। তিনিই পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান। বর্তমানে তার ৩ ভাই পেশায় চাকরিজীবি ও ব্যাবসায়ী এবং মা একজন গৃহিণী।
ফ্রিল্যান্সার মিজানের টার্নিং পয়েন্ট:
সফলতার পথ সর্বদা কষ্টের হয় সেটা আবারও প্রমাণ করে দিলেন ফ্রিল্যান্সার মিজান। তিনি তার ফ্রিল্যান্সিং জীবনে বারবার ব্যর্থ হয়েছেন, বারবার মানুষের নিন্দনীয় কথা শুনেছেন, তার দ্বারা কিছু হবে না, অনলাইন প্লাটফর্মে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলা একটা ফালতু বিষয়, এমন মন্তব্যেরও সম্মুখীন হয়েছেন দীর্ঘ সময় জুড়ে। তবে আজকের এই স্থান তিনি পেয়েছেন, তার ইচ্ছাশক্তি, চেষ্টা আর অধ্যবসায়ের জোরে। তিনি যখন পড়াশোনা করতেন তখন তার বাবা একজন ব্যাবসায়ী ছিলেন। তাই পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান হিসেবে তার বেশ কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। তবে সব কিছু মিলিয়ে সকল প্রতিকূলতাকে পাড়ি দিয়ে তিনি পৌঁছেছেন আজকের এই অবস্থানে।
ফ্রিল্যান্সার মিজানের বক্তব্য:
তিনি বলেন– আমি যখন আমার ফ্রিল্যান্সিং জীবন শুরু করি তখন শিকার হতে হয়েছে নানা বিরূপ পরিস্থিতির। ফ্রিল্যান্সিং জীবনের প্রথম কাজটা আমি করেছিলাম PTC সাইট নিয়ে। আমার প্রথম রোজগারের অ্যামাউন্ট ছিল মাত্র ৩৮৫ ডলার। এর পরবর্তীতে ডাটা এন্ট্রির কাজ শুরু করি। ধীরে ধীরে রোজগারের পরিসীমা বাড়তে থাকে। কিন্তু এরই মধ্যে আবার বেশকিছু কাজে টাকা ইনভেস্ট করেছিলাম, অথচ প্রত্যেকটাই লস চলে যায়। ফলে পেতে হয় বেশ ধাক্কা। কিন্তু আমি ছিলাম প্রচন্ড এনালাইসিসপ্রিয় একজন মানুষ। আর তাই অনলাইন প্লাটফর্মে নিজের একটা ক্যারিয়ার গড়ে তোলার জন্য ধীরে ধীরে খুঁজে বের করি নানা মাধ্যম, যেটা আমাকে হিউজ পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে সাহায্য করবে- সেই সাথে এনে দেবে দারুন সফলতা, পূরণ হবে মনের মাঝে জমে থাকা স্বপ্ন। যার মাধ্যমে আমার ক্যারিয়ার উজ্জ্বল হবে।
আমি মূলত, ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, এসইও, ফেসবুক মার্কেটিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ইউটিউব মার্কেটিং, ভিডিও ক্রিয়েটর, কনটেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, সেলস মার্কেটিং ইত্যাদি বিষয়ে প্রচুর স্টাডি করেছি এবং বিভিন্ন কোর্স কমপ্লিট করেছি। তবে প্রত্যেকটা বিষয়ে আমার স্কিল থাকলেও আমি আমার জীবনে প্রফেশনালি বেছে নিয়েছি এফিলিয়েট মার্কেটিংকে। আর এর কারণ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর প্রতি আমার আলাদা একটা ভালো লাগা ছিল। সত্যি বলতে অল্প সময়ের মধ্যে এই মাধ্যমে আমি সফলতাও অর্জন করতে পেরেছি।
মূলত এর একটাই কারণ কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় আর হার না মেনে নেওয়া এবং অদম্য ইচ্ছা শক্তি। আমি সর্বদা এটা বিশ্বাস করতাম– কষ্ট করলে একদিন সেই কষ্টের ফল অবশ্যই সুমিষ্ট হবে। হয়েছেও তাই। তবে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর পাশাপাশি মানুষের কাছে কিছু মেসেজ পৌঁছানোর জন্য, এই কাজগুলো সম্পর্কে তাদেরকে জানানোর জন্য শুরু করি ইউটিউব মার্কেটিং।
আমি যখন এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করেছিলাম, তখন মার্কেটিং রিলেটেড নাম ডিসাইড করি আর তারপরে শুরু করে দেই আমার ইউটিউব জীবন। আমি ইউটিউব মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে একদিকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করি অন্যদিকে অনলাইনে বিজনেসও করি। স্বপ্ন আছে সামনে আরও অনেকদূর যাবার। সেই সাথে স্বপ্ন আছে দেশ ও মানুষের কল্যানে ভুমিকা রাখার। শুরুতে যখন আমি বারবার ব্যর্থ হয়েছিলাম, তখন হজম করতে হয়েছে আপন মানুষদের অবহেলা, আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশীর নানা কটুক্তি। যেগুলো বারবার আমাকে দুমড়ে মুছরে ফেলছিল। কিন্তু আমি ছিলাম প্রচন্ড জেদি, আর আমার লক্ষ্য ছিল সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো। অবশেষে জেদ, ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা এবং রব্বুল আলামীনের অশেষ কৃপায় আমি সফলতা অর্জন করতে পেরেছি। তাই সব কিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ্, যে আমি আজ বরিশালের একজন সফল ফ্রিল্যান্সার।
ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন:
ফ্রিল্যান্সিং একটা ক্রিয়েটিভ পেশা। বর্তমানে অনলাইন প্লাটফর্মে এমন অনেক অনেক মাধ্যম রয়েছে যেখানে নিজেদের স্কিল এবং শ্রম দিয়ে আর্থিক অবস্থার বদল ঘটানো সম্ভব। আর তাছাড়াও এটা এমন একটি মাধ্যম যা বর্তমান তরুণ সমাজের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। তার চাইতে বড় কথা, কেউ যদি নিজের সবটা দিয়ে চেষ্টা করে এবং নিজেদের প্রতিভাকে জাগিয়ে তুলতে পারে তাহলে এই মাধ্যমে ইনকাম করার জন্য কোনরকম ইনভেস্টমেন্ট এর প্রয়োজন পড়ে না। তাই যারা আর্থিক অসচ্ছলতা থেকে বের হয়ে আসতে চায় এবং নিজেদের স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তর করতে চায় তাদের জন্য অবশ্যই ফ্রিল্যান্সিং আশীর্বাদস্বরূপ।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:
ফ্রিল্যান্সার মিজানের প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের জন্য দশের জন্য এমন কিছু করা, যেটা মানুষের উপকারে আসবে। তিনি তার জীবনে এমন কিছু করতে চান, যেটা বর্তমান তরুণ সমাজের জন্য অনেক বেশি হেল্পফুল হবে। সেই সাথে তার উদ্দেশ্য, আরো আরো জ্ঞান আহরণ করা। তিনি মনে করেন জানার কোন শেষ নেই এবং শিক্ষার কোন বয়স নেই। তাই তিনি ফ্রিল্যান্সিং জীবনে আরও অনেক অনেক বিষয় সম্পর্কে স্কিল অর্জন করতে চান। তিনি এতটাই রিসার্চ প্রেমি যে, তার নতুনত্ব জানতে খুঁজে বের করতে অনেক বেশি ভালো লাগে। এজন্য তিনি তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণের জন্য সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চান ক্রিয়েটিভ মাইন্ডের প্রসার ঘটাতে চান এবং দেশের জন্য যাতে ভালো কিছু করতে পারেন সেই নিয়তেই এগিয়ে যেতে চান। সকলের কাছে তিনি দোয়া প্রার্থী। তিনি এটা মন থেকে বিশ্বাস করেন– একটা মানুষের প্রতি দোয়া এবং ভালোবাসা তার জীবনে অন্যতম অভিজ্ঞতার সাক্ষাৎ করাতে সক্ষম।
নতুনদের জন্য পরামর্শ
নানা প্রতিকূলতা পারি দিয়ে অভিজ্ঞতার আলোকে নতুনদের উদ্দেশ্যে তিনি কিছু কথা বলেছেন। তার মতে কোন মানুষ চেষ্টা করলে বিফলে যাবে না। যে চেষ্টা করবে সে সামনের দিকে আগাবে, আর যে অল্পতেই ভেঙে পড়বে সে সেখানেই মিলিয়ে যাবে। তাই কেউ যদি ফ্রিল্যান্সিংকে নিজের পেশা হিসেবে নিতে চায় তাহলে অবশ্যই তাকে ক্রিয়েটিভ মাইন্ডের হতে হবে এবং পরিশ্রমী হতে হবে। এর মধ্যে ভাগ্য বলে একটা কথা আছে, তাই ভাগ্যেও থাকতে হবে অবশ্যই। কিন্তু সৃষ্টিকর্তা আমাদের প্রত্যেককে পরিশ্রমের ফলস্বরূপ যেকোনো কিছু উপহার হিসেবে দিয়ে থাকেন। তাই পরিশ্রমের ওপরে কোন কিছু নেই। তিনি জানান- খারাপ সময় আসবে, মানুষ কটু কথা বলবে, তবুও উঠে দাঁড়াতে হবে। আর এটা শুধু একবার নয় বারবার। আর ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, এটা তরুণ তরুণীদের অন্যতম হাতিয়ার।
ফ্রিল্যান্সিং জীবন গড়ে নেওয়া এক সম্ভাবনার সুযোগ। আর তাছাড়াও প্রতিকূলতা মানুষকে বাস্তবতা শেখায়। বাস্তবতা অনুভব করে নিজেকে সময়ের সাথে সাথে বদলাতেই হবে। আর যদি এটা সম্ভব না হয় তাহলে সেই সময় তাদের জন্য নয়। মেইন কথা হচ্ছে– যতটা সম্ভব নিজের স্কিল বাড়াতে হবে, মেধা খাটাতে হবে, কষ্ট যন্ত্রণা অপমান সহ্য করতে হবে, কিন্তু লেগে থাকতে হবে। তবেই সম্ভব একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়া।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: