ডেস্ক রিপোর্টার: ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণহীন। ১দিনের ব্যবধানে ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়ে কার্ব মার্কেটে ১০০ টাকা পার হয়েছে ডলারের দাম। অনেক মানি এক্সচেঞ্জেই নেই পর্যাপ্ত ডলার। টাকা দিয়েও চাহিদা মত মিলছেনা আন্তর্জাতিক এ মুদ্রা। ফলে খোলাবাজারে অনেক কমেছে ডলারের কেনা-বেচা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ডলারের সংকটে নতুন চ্যালেঞ্জে পড়বে অর্থনীতি। বর্তমান লাগামছাড়া পাগলা ঘোড়া হলো ডলার। গেল কয়েক মাস ধরেই খোলা বাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ বেঁধে দেয়া দর ৮৭ টাকা ৫০ পয়সার চেয়ে অনেক বেশি দরে কেনা বেচা হচ্ছে আন্তর্জাতিক এ মুদ্রার। গত ১০ বছরের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ১০০ টাকা পেরিয়েছে খোলাবাজারে ডলারের দাম।
মানিএক্সচেঞ্জ হাউসগুলো বলছে, ডলারের এমন উর্ধমুখি দাম নজিরবিহিন। অস্থিরতায় কমেছে বাজারে ডলারের কেনা-বেচা।
ডলার বিক্রেতারা জানান, চাহিদার তুলনায় ডলার মার্কেটে সেরকম নেই। যার যার কাছে ডলার আছে অনেকেই ভাবতাছে যে ডলার রেট বাড়তে পারে তাই রেখে দিচ্ছে। তারা যে পরিমানে ডলার কিনছি তা যে বিক্রি করব, সেরকম ক্রেতা পাচ্ছি না।
করোনা স্বাভাবিক হওয়ায় বেড়েছে বিদেশ ভ্রমণের প্রবনতা। আর তাতে বাড়ছে ডলারের চাহিদা। তবে, যে হারে ডলার দেশের বাইরে যাচ্ছে সে তুলনায় আসছেনা দেশে।
ডলার ক্রেতারা জানান, নব্বই-আটাশি টাকা যদি স্থির থাকত তাহলে যারা বিদেশে যাচ্ছে তাদের জন্য খুবই সুবিধার হতো। যারা সাধারনত টুরিস্ট বা ব্যবসার জন্য বাইরে যান তারা নানা রকম ভোগান্তিতে পরেন।
আন্তর্জাতিক লেনদেন একমাত্র বিনিময় মাধ্যম ডলার। রপ্তানিকারকদের জন্য দাম বৃদ্ধি সুখকর হলেও বিপাকে আছেন আমদানিকারকরা। এমন কি ব্যাংকিং খাতে চলছে ডলারের তীব্র সংকট।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে আমদানী বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। যার বিপরীতে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি মাত্র ৩৫ শতাংশ। আর এতেই বাণিজ্য ঘাটতি ছাড়িয়েছে ১ হাজার ৫শ' ৬০ কোটি ডলার।
পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে রিজার্ভ থেকে বাজারে ডলার সরবরাহের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
মেঘনা ব্যাংকের সাবেক এমডি মোহাম্মদ নুরুল আমীন বলেন, ‘সরকার যথেষ্ট সচেতন আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের খোঁজখবর রেখেই এটার ব্যবস্থা করবেন। সমাধান হিসেবে সাভাবিক ভাবে ডলারের সরবরাহ আরও বাড়াতে হবে।’
অর্থনীতিবিদদের শঙ্কা ডলারের দামের লাগাম টেনে ধরা না গেলে আরও চাপে পড়বে অর্থনীতি, বাড়বে মূল্যস্ফীতিও। বিপাকে পড়বে সাধারণ মানুষ।
ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের স্বতন্ত্র পরিচালক ফারুক মঈন উদ্দিন বলেন, ‘ঘাটতিটা কমিয়ে আনা যায় কিনা, কিংবা ডলারের উপর যে চাপ রয়েছে তা কিছুটা কমানো যায় কিনা এটাই এখন আমাদের ভাবতে হবে।’
সামনে কোরবানি ঈদে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়লে ডলারের দামের উর্ধগতি কিছুটা কমে আসবে বলেও প্রত্যাশা বিশ্লেষকদের।
বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি মুখপাত্র আল মামুন মৃধা বলেন, ‘আমাদের এই একটা মুদ্রার উপর এত যে বেশি নির্ভরশীলতা, সেটাকে যদি আমরা কোনো ভাবে কমিয়ে বহুমুখী করতে পারতাম, তাহলে মনে হয় আজকে যে সংকটটা যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, সেটা কিছুটা কমাতে পারতাম।’
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: