নিউজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর এডওয়ার্ড টেড এম কেনেডি জুনিয়র বলেছেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভুল পক্ষ নিয়েছিল। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় তারা খুবই খুশি। মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র সরকার পাকিস্তানের পক্ষ নিলেও বাঙালির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন দেশটির সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডি (প্রয়াত)। বাংলাদেশের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করেছিলেন তিনি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর তাঁর ছেলে কেনেডি জুনিয়র ঢাকায় এসে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের সমালোচনা করলেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আট দিনের সফরে শনিবার এসেছেন তিনি।
রোববার ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয় পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে টেড এম কেনেডি জুনিয়র বলেন, ১৯৭২ সালে তার বাবা বাংলাদেশে এসেছিলেন। ঢাকায় তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়েছিল। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। তাঁর পরিবারের সদস্য হিসেবে এখানে আসতে পেরে তারা গর্বিত। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ক্যাথরিন কিকি কেনেডি, মেয়ে কাইলি কেনেডি, ছেলে টেডি কেনেডি, ভাতিজি গ্রেস কেনেডি অ্যালেন ও ভাতিজা ম্যাক্স অ্যালেন।
বেঙ্গল শিল্পালয়ে তাঁদের অভ্যর্থনা জানান বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সভাপতি আবুল খায়ের, মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী, ট্রাস্টি জিনাত চৌধুরী, নউশীন খায়ের ও যুক্তরাষ্ট্রের বস্ন্যাক হিলস স্টেট ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক আহরার আহমেদ। মধ্যাহ্নভোজের পর যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করেন বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বেঙ্গল শিল্পালয়ে ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী 'ভয়েসেস অব বাংলাদেশ: দ্য জার্নি টু ফিফটি' ঘুরে দেখেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা দূতাবাসের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে মার্কিন দূতাবাস ও বেঙ্গল ফাউন্ডেশন যৌথভাবে মৌখিক ইতিহাস সংগ্রহের কার্যক্রম 'ভয়েসেস অব বাংলাদেশ: দ্য জার্নি টু ফিফটি' শুরল্ফম্ন করে। স্বাধীনতা অর্জন ও পরবর্তী পাঁচ দশকে রাজনৈতিক ও সামাজিক নানা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়া বর্তমান বাংলাদেশের অজানা গল্পগুলো এখানে তুলে আনার চেষ্টা চলছে। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাজশাহী, খুলনা, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট শহরে ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে। ১৬ অক্টোবর রাজশাহীতে এই প্রদর্শনী শুরু হয়। ৩০ অক্টোবর শুরু হলো ঢাকায় বেঙ্গল শিল্পালয়ে। সপ্তাহজুড়ে চলবে এই প্রদর্শনী। মাল্টিমিডিয়া প্রদর্শনীতে দেখা যাবে তথ্য ও ছবি, থাকছে অডিও-ভিডিও। পরে এগুলো ভয়েস অব বাংলাদেশ ডটস্পেস ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
'ভয়েসেস অব বাংলাদেশ: দ্য জার্নি টু ফিফটি'র সমন্বয়ক, গবেষক ও আইক্যান ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আইরিন খান বলেন, এর মাধ্যমে আমরা দেশের প্রান্ত্মিক জনগোষ্ঠীর মুক্তিযুদ্ধের অংশগ্রহণের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে সাবেক মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডির সন্তান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশকে ভিন্নমাত্রায় জানার সুযোগ পেয়েছেন।'
প্রদর্শনী ঘুরে দেখে কেনেডি জুনিয়র বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে। সেই যুদ্ধে মানুষের অংশগ্রহণ এবং মুক্তির গল্প ভয়েসেস অব বাংলাদেশ প্রদর্শনীতে এসে দেখার সুযোগ পেলাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও অগ্রগতি নিয়ে আমরা গর্বিত।'
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: