নিউজ ডেস্ক: র্যাব ও পুলিশের শীর্ষ সাত কর্মকর্তার ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিবেশী ভারতের সহযোগিতায় চাওয়ায় তা জাতির জন্য ‘লজ্জার বিষয়’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, এই সরকার সম্পূর্ণভাবে পরনির্ভরশীল হয়ে গেছে। তারা নিজেদের স্বার্থ ছাড়া অন্য কোনো স্বার্থ দেখে না।
রোববার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের ওপর যে সেনকশন এসেছে, তা প্রত্যাহারের জন্য তারা (আওয়ামী লীগ) প্রথমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ধর্ণা দেয়। তাতে সুবিধা না হলে পরে ভারতের সহযোগিতা নিয়ে সেই সেনকশন প্রত্যাহার করাতে চায়। এটা জাতির জন্য লজ্জার বিষয়।
তিনি বলেন, সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। বিনা বিচারে হত্যা করা হচ্ছে, মামলা দেওয়া হচ্ছে। আমরা কি সারা জীবন পুলিশ নির্যাতন, সরকারি নির্যাতনের মধ্যে থাকব? এই অবস্থা চলতে দেওয়া যেতে পারে না।
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনায় তিনি বলেন, আমরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য, যেখানে মানুষের আয়ের সমতা থাকবে। বেঁচে থাকার জন্য যা যা দরকার তা মানুষ পাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে ৫০ বছর পর আমাদের সেটা নিয়ে পরিতাপ করতে হয়। এ সরকারের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নাই। সরকার জনগণ দ্বারা প্রত্যাখাত।
মহান মে দিবসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরার পর মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সরকার শ্রমিক শ্রেণির অধিকার হরণ করেছে। রানা প্লাজার শ্রমিকরা নিহত হয়েছেন, সে ঘটনার বিচার হয়নি। যারা আহত হয়েছেন, তারা এখনও তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পায়নি। সারা বাংলাদেশের আমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা ন্যায্য দাবি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তেলের দাম বেড়েছে, লবণের দাম বেড়েছে। আমাদের শ্রমিক শ্রেণির ভাইয়েরা কী কষ্টে দিনযাপন করছে। বড় লোকদের জন্য বড় বড় হাসপাতাল তৈরি করে কিন্তু গরীবদের জন্য কোনো হাসপাতাল তৈরি হয় না। তারা চিকিৎসার সুযোগ পায় না। তাদের ছেলেমেয়েরা আজকে শিক্ষার সুযোগ পায় না। সবকিছু থেকে এদেশের শ্রমিক শ্রেণি বঞ্চিত।
অধিকার আদায়ের সংগ্রামে শ্রমিকদের সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, কোনো দাবি আদায় হয় না সংগ্রাম ছাড়া, কোনো রক্তপাত ছাড়া। রাস্তায় নেমে যখন অধিকারের আওয়াজ তুলবেন তখনই তারা তাদের বাধা দেবে, গুলি করবে। তারা অত্যাচার করবে। কিন্তু সেই বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হবে।
নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য বিএনপি যে আন্দোলন করছে, তাতেও শ্রমিক শ্রেণির সমর্থন থাকবে বলে সমাবেশে প্রত্যাশা করেন বিএনপি মহাসচিব।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: