• ঢাকা
  • বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৮ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

ঠাকুরগাঁওয়ে উজ্জ্বল আলোর দ্রুতি ছড়াচ্ছে-পদ্মা গ্রন্থাগার


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১০:৫৮ এএম
ঠাকুরগাঁওয়ে উজ্জ্বল আলোর দ্রুতি ছড়াচ্ছে
পদ্মা গ্রন্থাগার

গৌতম চন্দ্র বর্মন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ শিল্পায়নে অনুন্নত দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। কৃষিতে স্বনির্ভর থাকার পরও বড় বা মাঝারী কোন শিল্প কল কারখানা গড়ে না ওঠায় এ জেলা আজও অনুন্নত রয়ে গেছে। এ জেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রাম বাসুদেবপুর। জেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরের গ্রামটি বাংলাদেশের অন্য আর সব গ্রামের মতোই।

একটি পাঠাগারের বদৌলতে গ্রামটি তো বটেই, আশপাশের ৫-৬টি গ্রামের দৃশ্যপটে এসেছে অনেক পরিবর্তন। যে কিশোর-কিশোরীরা সারা দিন অন্য সব খেলাধুলা বা মোবাইলে বুঁদ হয়ে থাকত, তারা এখন সুযোগ পেলেই ঢু মারে এই পাঠাগারে।

জ্ঞানের বাতিঘর নামে পরিচিতি পাওয়া এ পাঠাগারের নাম ‘পদ্মা গ্রন্থাগার’। গ্রামের কিশোর-কিশোরীদের মানসপটে এই গ্রন্থাগার জ্ঞানের বীজ বপন করছে প্রতিনিয়ত। মোবাইলের হাতছানি রেখে দেশ-বিদেশের রকমারি সব বইয়ের ভুবনে ডুবে থাকে তারা। শিশুদের কাছেও এ পাঠাগার অন্যতম পছন্দের জায়গা। শিশু-কিশোর আর বয়স্কদের মেলবন্ধনে জমে ওঠে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা।

বর্তমানে দুই হাজারেরও বেশি বই রয়েছে পদ্মা গ্রন্থাগারটিতে। সাহিত্য, বিজ্ঞান, ইতিহাস, জীবনী, চাকরির পরীক্ষার প্রস্ততিমূলক বই, ম্যাগাজিন, সংবাদপত্র, মাসিক কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, শিশুসাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ে বইপত্র পাওয়া যায় এখানে। পাঠাগারের পশ্চিম পাশের একটি অংশজুড়ে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক নানা বই। আর এসব বই পড়ে জ্ঞান আহরণ করতে প্রতিদিনই সেখানে ছুটে আসেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বইপ্রেমী মানুষেরা। 

বাসুদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘আশপাশের তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ পাঠাগারে নিয়মিত আসে। এতে তাদের মধ্যে পাঠাভ্যাস তৈরি হচ্ছে।

পাঠাগারে আসা রানা, মৌসুমি ,দিপক সহ কথা হয় মিমের সাথে। বিভিন্ গ্রাম এবং বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পড়া এসব পাঠকরা জানায়, যখন ক্লাস থাকে না তখনই চলে আসে এই পাঠাগারে। এখানে এসে গল্পের বই, স্কুলের বই-পত্রিকাসহ নানা রকম বই পড়ে। আগে অবসরে শুধু টিভি আর মোবাইলে গেমস খেলে সময় পার করতে হতো। এখন বই পড়ে অনেক আনন্দ পায় তারা।

২০২০ সালে পদ্মা গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন এই গ্রামেই জন্ম নেওয়া প্রদীপ রায়। তিনি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার রয়্যাল মেলবোর্ন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গ্রন্থাগার কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। প্রদীপ রায়ের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘ছেলেবেলা থেকেই বই পড়তে পছন্দ করতাম। কিন্তু বাবা ছিলেন চতুর্থ শ্রেণির সরকারি কর্মচারী। যা বেতন পেতেন তা দিয়ে চার ভাই-বোনের ভরণপোষণও চলত না। তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি শ্রমিকের কাজ শুরু করি। কলেজে ভর্তির পর একটি লাইব্রেরির গুরুত্ব অনুধাবন করি। তখন মনে মনে পণ করেছিলাম, কখনো সামর্থ্য হলে নিজের এলাকায় একটি গ্রন্থাগার করবো।’

পাঠাগার স্থাপনের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার মো. আলাউদ্দীন আল আজাদ।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image