• ঢাকা
  • রবিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০৫ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

নিঃস্ব হওয়া থেকে বাঁচতে  ব্যাংকের সহযোগিতা  চায় ব্যবসায়ী 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: রবিবার, ১৩ আগষ্ট, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:১৩ পিএম
নিঃস্ব হওয়া থেকে বাঁচতে  
ব্যাংকের সহযোগিতা  চায় ব্যবসায়ী 

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় সুযোগ না দিয়ে বন্ধককৃত ২০ কোটি টাকার জমি ব্রাক ব্যাংক ৫ কোটি টাকায় বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন মো: ইদ্রিসুর রহমান মধু নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি শিল্পী ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে একটি ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। 

তিনি বলেন, ব্রাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমার ৭২.৫০ শতাংশ জমি মাত্র পাঁচ কোটি পঁয়ত্রিশ লক্ষ টাকায় নিলাম করে। তবে এই জমির বাজার মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকার মত। আমার এই জমির পাশে ৩০ ফুট রাস্তা আছে। এই জমিটা পুরো স্কয়ার সাইজ, এমন জমি এই এলাক আর কোথাও নেই। আমার আশা ছিল আমি একটা ইন্ডাস্ট্রি করব, যেখানে কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে। পাশাপাশি এই জমি যদি আমি নিজেই বিক্রি করতাম তাহলে ব্যাংকের পুরো টাকা পরিষোধ করে ঋন খেলাপি থেকে মুক্ত হতে পারতাম। এখন এই জমি নিলামে বিক্রি করার পরও ঋন খেলাপি থেকে মুক্ত হতে পারিনি। 

রবিবার (১৩ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে 'শিল্পি ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সুদৃষ্টি ও সহযোগিতা কামনায়' আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। 

মো: ইদ্রিসুর রহমান মধু বলেন, গত ২০১৬ সালের মে মাসে ব্র্যাক ব্যাংকের পান্থপথ শাখা থেকে আট কোটি পঞ্চাশ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করি এবং পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে মোট তের কোটি টাকা ঋণের নেয়া হয়। এর মধ্যে প্রায় দুই কোটি টাকা বিভিন্ন সময়ে আমি পরিশোধ করেছি। কিন্ত পরবর্তীতে করোনা ভয়াল থাবার কারণে আমার ব্যবসায় ধ্বস নেমে আসে, এবং  আমি ঋণ পরিশোধে অপরাগ হয়ে পড়ি। এমতাবস্থায় পরবর্তীতে ব্র্যাক ব্যাংক আমার বন্ধককৃত জমি নিলামে উঠায় এবং বিক্রি করতে ব্যর্থ হয়। 

তিনি বলেন,  চলমান প্রক্রিয়ায় টাকার পরিমাণ সুদে-আসলে আমার শিল্পী ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এর বিরুদ্ধে ১৪ কোটি ৯৫ লক্ষ ৯২ হাজার ৬৬২ টাকা দাবি করে অর্থ ঋণ আদালত ০২ ঢাকায় অর্থঋণ মামলা করে ব্র্যাক ব্যাংক। যার মামলা নং- ১৭২৪/২০১৮। মামলা চলমান অবস্থায় পুনরায় বন্ধককৃত জমি নিলামের আবেদন করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এবং এবছর গত ১৮ এপ্রিল প্রিন্ট মিডিয়া যায়যায় দিন পত্রিকায় নিলাম প্রকাশ করে।

উক্ত নিলামকে আমি চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দাখিল করি। যার পিটিশন নং- ৫৬৬৯/২০২৩।  এবং গত ১৫ জুন হাইকোর্ট বিভাগে আমাকে তিন মাসের মধ্যে দুই কোটি টাকা ব্র্যাক ব্যাংকে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এবং তিন মাসের স্থগিত আদেশ প্রদান করে। কিন্তু ব্র্যাক ব্যাংক মাত্র তিন দিনের মাথায় উক্ত স্টে অর্ডার এর বিরুদ্ধে চেম্বার জজ আদালতে যায় এবং স্থগিতাদেশ লাভ করে এবং ২১ জুন নিলামের মাধ্যমে আমার বিশ কোটি টাকা মূল্যের জমি মাত্র পাঁচ কোটি পঁয়ত্রিশ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেয় ব্র্যাক ব্যাংক। ব্র্যাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ক্রেতার সাথে আতাত করে আমার জমি চার ভাগের ১ (এক) ভাগ দামে বিক্রি করে। এর ফলে আমি চরম আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হইয়াছি। 

তিনি বলেন, ঋণ নেবার পর কয়েকটা ইনস্টলমেন্ট পরিশোধ করি। করোনার কারণে হঠাৎ করে আমার ব্যবসায় ধ্বস নামে। তারপর নানান টেনশন আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় আমার হার্টের তিনটা ব্লক ধরা পড়ে। এমন অবস্থায় আমি ব্র্যাক ব্যাংক থেকে যে ঋণ নিয়েছিলাম সেটা সময় মত পরিশোধ করতে পারিনি। 

নিলামের পূর্বে বহুবার ব্রাংক ব্যাংক এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে জানিয়ে ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী বলেন, আমি আমার জমি নিজেই বিক্রি করে টাকা পরিশোধ করতে চাই এবং এমনকি আমি ব্র্যাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে বলি যে, আমার কাছে ক্রেতা আছে। কিন্তু ব্র্যাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাকে তাদের অফিসে ঢুকতে না দিয়ে আমাকে কোন রকম সুযোগ না দিয়ে অন্যায়ভাবে আমার জমি বিক্রি করে দেয়। 

তিনি আরো বলেন, ব্রাক ব্যাংক সমস্ত কিছু জাচাই বাছাই না করে কখনো কাউকে ঋন দেয় না। আমি জমি দেখিয়ে যে ১৩ কোটি টাকা ঋন নিয়েছি, সে জমির যদি মূল্য না থাকত তাহলে কিন্তু আমাকে ব্যাংক ঋনদিত না। কিন্তু কেন তাহলে আমার এই জমি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মাত্র ৫ কোটি টাকায় নিলাম করল, যেই জমির বাজার মূল্য ২০ কোটি টাকা। বর্তমানে এই জমি নিলামে বিক্রি করার পরও কিন্তু আমি ঋন খেলাপি থেকে মুক্ত হতে পারিনি। ব্র্যাক ব্যাংক যদি আমাকে সময় দিত তাহলে এই জমি আমি ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করে তাদের সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ করতে পারতাম। 

সরকারের কাছে ন্যায় বিচার চেয়ে তিনি আরো বলেন, আমার দাবি হচ্ছে ব্র্যাক ব্যাংকের নিলাম সংশ্লিষ্ট ও রিকভারী টিমের অফিসার ওরা কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে আমার ২০ কোটি টাকার জমি পাঁচ কোটি পঁয়ত্রিশ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেয়। এতে দেখা যায় যে, আমার মত ক্ষুদ্র মাঝারী ব্যবসায়ীকে বাঁচানোর পরিবর্তে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জমির ব্যবসায় লেগে গেছে এবং আমাকে পথে বসানোর ব্যবস্থা করেছে। আমি এখন সর্বশান্ত ও নিঃস্ব হওয়ার পথে আছি। আমি বাংলাদেশ সরকারের কাছে ন্যায় বিচার চাই। যাতে করে আমার জমি ফেরৎ পেতে পারি এবং উক্ত জমি বিক্রি করে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে পারি এ ব্যাপারে সরকারের ন্যায় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image