• ঢাকা
  • সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

হিন্দুরা সকল অস্ত্র দেবতার হাতে দিয়ে নিজে নিরস্ত্র হয়ে বসে আছে


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: শনিবার, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৮:৫৫ পিএম
জন্মাষ্টমী
২০২৩ সালের জন্মষ্টমী মিছিলে একটি হিন্দু সংগঠনের শোভাযাত্রা, ছবি ঢাকানিউজ

শিতাংশু গুহ

জন্মষ্টমী উপলক্ষ্যে এবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। ৫ হাজার হিন্দু নেতানেত্রী (এতো নেতা?) উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজেদের সংখ্যালঘু ভাববেন না, সবাই এদেশের নাগরিক, সবার সমান অধিকার। সুন্দর কথা। ক’দিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইসলাম শ্রেষ্ট ধর্ম, মদিনা সনদে দেশ চলবে একথাও প্রায়শ: বলেন। সংবিধানের ললাটে ৫ম ও ৮ম সংশোধনী, অর্থাৎ ‘বিসমিল্লাহ’ ও ‘রাষ্ট্রধর্ম’ তো আছেই। শত্রু সম্পত্তি আইন, ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্টও আছে। এরপরও প্রধানমন্ত্রী যখন বলেছেন, তখন হিন্দুরা এখন থেকে হিন্দু নামে পরিচিত হোন, অথবা ২য় সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিক হিসাবে পরিচিত হতে পারেন।

ঢাকায় অন্যত্র একই অনুষ্ঠানে অর্থাৎ জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সামনে নির্বাচন, সময় খারাপ, এ সময় অশুভ শক্তি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করতে পারে। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ প্রামানিকের নাম উল্লেখ করেন। জবাবে গোবিন্দ প্রামানিক শত্রু সম্পত্তি আইন, রমনা কালীবাড়ি, হিন্দুদের দেশত্যাগে বাধ্য করা ইত্যাদি প্রসঙ্গ টেনে হিন্দু নির্যাতন ও দেশত্যাগে বাধ্য করা ছাড়া গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার হিন্দুদের জন্যে কি করেছে তা জানতে চেয়েছেন। নির্বাচন এলে ভোটারের দাম বাড়ে, আপাতত: হিন্দুদের কিছুটা কদর বেড়েছে।

প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দিলেন নিজেদের ‘সংখ্যালঘু’ না ভাবতে। মন্ত্রী বললেন, ‘সংখ্যালঘু’র ওপর হামলা হতে পারে। হিন্দুরা কার কথা শুনবে? মিডিয়া থেকে মন্ত্রীর বক্তব্য আরো কিছুটা শোনা যাক? মন্ত্রী বলেছেন, খুব স্পর্শকাতর সময়, সামনে নির্বাচন, অশুভ শক্তির খেলা শুরু হয়ে গেছে। তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার একমাত্র গ্যারান্টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার চেয়ে সনাতন ধর্মের মানুষের আপন দ্বিতীয় কেউ নেই। মন্ত্রী আরো বলেন, ‘দেশে অসুরের আস্ফালন হচ্ছে। দুষ্টের সংখ্যা বেড়ে গেছে।’ তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে এটা প্রমাণিত যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইবোনেরা নিরাপদে ছিলেন, নিরাপদে আছেন।

গণভবনের অনুষ্ঠান ঘন্টা দেড়েক স্থায়ী হয়, ক’জনা নেতা ভাষণ দেন্। মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি মনিন্দ্র দেবনাথ ২০১৮’র নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণের আহ্বান জানান। পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জেএল ভৌমিক দুষ্কৃতিকারীদের শাস্তি ত্বরান্বিত করতে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নের কথা বলেন। জন্মাষ্টমী কমিটির সভাপতি সুকুমার চৌধুরী ৬৪ জেলায় মডেল মন্দির ও দুর্গাপূজার ছুটি বাড়ানোর দাবি জানান। অন্যদের বক্তব্য আমার জানা নেই? তবে মন্ত্রী সাধন মজুমদার বলেছেন, এখন দাবিদাওয়ার সময় নয়, এখন নৌকার জন্যে কাজ করার সময়, যাতে নৌকা আবার ক্ষমতায় আসে। প্রধানমন্ত্রী দাবিদাওয়া নিয়ে উচ্চবাচ্য করেননি, তিনি তার সরকারের কর্মকান্ড তুলে ধরেন।

জন্মাষ্টমীতে দেশে ছুটি। এটি এরশাদ করেছেন। জন্মাষ্টমী কৃষ্ণের জন্মদিন। কৃষ্ণ মানে কুরুক্ষেত্র, সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্যে যুদ্ধ করা। ঢাকায় জন্মাষ্টমী মিছিলে যত লোক হয়, সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে এই লোকগুলো মাঠে নামলে অত্যাচারীরা দৌড়ে পালাতো। হিন্দুরা বাঁশি হাতে কৃষ্ণ, রাধাকৃষ্ণ ও বাল-গোপালের পূজা করে, কীর্তন করে, খিচুড়ি প্রসাদ খায়। শস্ত্রধারী, চক্রহাতে কৃষ্ণের কথা মনে ঠাই দেয়না। কৃষ্ণ ও রাম যুদ্ধ করে জগতে সত্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। হিন্দুর প্রায় সকল দেবদেবী সশস্ত্র, দূর্গা-কালী সবাই যুদ্ধ করে খ্যাত। গীতায় কৃষ্ণ বারবার বলেছেন, ‘যুদ্ধ কর’। অথচ হিন্দু সকল অস্ত্র দেবতার হাতে দিয়ে নিজে নিরস্ত্র হয়ে বসে আছে।

# guhasb@gmail.com;

ঢাকানিউজ২৪.কম / এসডি

আরো পড়ুন

banner image
banner image