• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

শব্দদূষণের প্রভাবে ঢাকার ৫০ শতাংশ মানুষ শুনার ক্ষমতা হারাবে


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ০৪ মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১:২৭ পিএম
অদূরভবিষ্যতে শব্দদূষণের প্রভাবে ৫০ শতাংশ মানুষ শুনার ক্ষমতা হারাবে
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলন (পরিজা)।

নিজস্ব প্রতিবেদক : পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলনের (পরিজা) সভাপতি প্রকৌশলী মোঃ আবদুস সোবহান বলেন, বাংলাদেশে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে শব্দদূষণের মাত্রা ভয়াবহ আকারে ছাড়িয়ে গেছে। এ হারে শব্দ দূষণ চলতে থাকলে অদূরভবিষ্যতে ৫০ শতাংশ মানুষ ৩০ ডেসিবল শব্দ শুনার ক্ষমতা হারাবে। এছাড়াও শিশু ও গর্ভবতী নারীরা চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছে। তাই প্রয়োজন শব্দদূষণ বিধিমালা আইনের কঠোর প্রয়োগ।

সোমবার (০৪ মার্চ) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত ঢাকা মহানগরীতে শব্দ দূষণের বর্তমান চিত্র ও করণীয় শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি ।

লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী মোঃ আব্দুস সোবহান বলেন, রাজধানী ঢাকা এবং বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন নগর‌ মহানগরে এমনকি কোনো কোনো গ্রামীণ জনপদেও শব্দদূষণের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। শব্দদূষণের কুফল বিষয়ে জনসচেতনতার অভাব এবং শব্দদূষণ প্রতিরোধে যথাযথ প্রশাসনিক নজরদারী ও পদক্ষেপের ঘাটতির কারণেই এমনটি হচ্ছে। তাই শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এর ক্ষমতাবলে সরকার শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ প্রণয়ন করলেও তার বাস্তব প্রয়োগ খুবই অপ্রতুল। শব্দদূষণ মানুষের স্নায়ুগুলো ধবংস করে দেয়। ক্রমাগত শব্দদূষণের ফলে কানের টিস্যুগুলো আস্তে আস্তে বিকল হয়ে পড়ে। তখন মানুষ আর স্বাভাবিক শব্দ কানে শুনতে পায় না। 

তিনি আরো বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ৬০ ডেসিবল শব্দে মানুষের সাময়িক শ্রবণশক্তি নষ্ট এবং ১০০ ডেসিবল শব্দে চিরতরে শ্রবনশক্তি হারাতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে শব্দ দূষণের বর্তমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা মহানগরীর ৫০ শতাংশ মানুষ ৩০ ডেসিবল শব্দ শুনার ক্ষমতা হারাবে, শিশুদের মধ্যে বধিরতার হার ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকবে এবং তারা লেখাপড়ায় অমনোযোগী ও বিকার মানসিকতাসম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠবে। 

পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলন (পরিজা) চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা মহানগরীর ৪৫টি স্থানে শব্দের মাত্রা পরিমাপ করে। এতে নীরব এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা ৮৪.৫ থেকে ১০১.৭ ডেসিবল এবং রাত্রিকালীন ৯৬.৪ থেকে ১০১.৫ ডেসিবল। আবাসিক এলাকায় দিবাকালীন ৮২.০ থেকে ৯১.০ ডেসিবল এবং রাত্রিকালীন ৮৩.০ থেকে ৯১.৬ ডেসিবল। মিশ্র এলাকায় দিবাকালীন ৯১.০ থেকে ১০১.৫ ডেসিবল এবং রাত্রিকালীন ৮৯.০ থেকে ১০৩.৮ ডেসিবল। বাণিজ্যিক এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা ৯২.০ থেকে ৯৭.০ ডেসিবল এবং রাত্রিকালীন ৯১.০ থেকে ৯৯.০ ডেসিবল। বাসের ভিতর ৮০.৪ থেকে ৮৩.৯ ডেসিবল। বাংলামটরে শব্দের মাত্রা ১০৩.৮ ডেসিবল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শব্দের মাত্রা ৮৬.০০ থেকে ৯৪.০০ ডেসিবল। সচিবালয় এলাকায় শব্দের মাত্রা ৯৬.০০ থেকে ১০১.৭ ডেসিবল।

ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নীরব এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা মানমাত্রার চেয়ে দুই গুণের বেশী এবং রাত্রিকালীন শব্দের মাত্রা মানমাত্রার চেয়ে আড়াই গুণের বেশী। আবাসিক এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা মানমাত্রার চেয়ে দেড় গুণের বেশী। আবাসিক এলাকায় রাত্রিকালীন শব্দের মাত্রা মানমাত্রার চেয়ে দুই গুণের বেশী। মিশ্র এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা মানমাত্রার চেয়ে দেড় গুণের বেশী। মিশ্র এলাকায় রাত্রিকালীন শব্দের মাত্রা মানমাত্রার চেয়ে দুই গুণের বেশী। বাণিজ্যিক এলাকায় দিবাকালীন ও রাত্রিকালীন শব্দের মাত্রা মানমাত্রার চেয়ে দেড় গুণ বেশী। নীরব এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা সবচেয়ে বেশি সচিবালয় এলাকায় যা ১০১.৭ ডেসিবল এবং রাত্রিকালীন শব্দের মাত্রা সবচেয়ে বেশি ধানমন্ডি ল্যাবএইড যা ১০১.৫ ডেসিবল। মিশ্র এলাকায় দিবাকালীন শব্দের মাত্রা সবচেয়ে বেশি বাংলামটর যা ১০৩.৮ ডেসিবল এবং রাত্রিকালীন শব্দের মাত্রা সবচেয়ে বেশি লালবাগ সেকশন যা ১০১.৫ ডেসিবল। শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে আইনের প্রয়োগ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে এ হার কামানো যেতে পারে বলে মত দেন বিশেষজ্ঞরা। 

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বলের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মোঃ মুস্তাক হোসেন, নগর গবেষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও কেমেলিয়া চৌধুরী প্রমুখ। 

 

 

ঢাকানিউজ২৪.কম / জেডএস/সানি

আরো পড়ুন

banner image
banner image