
নিউজ ডেস্ক : কানাডার টরেন্টোর একটি হাসপাতালে একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি আসাদ চৌধুরী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
কবি আসাদ চৌধুরীর ছোট ছেলে জারিফ চৌধুরী এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
জারিফ চৌধুরী টরেন্টো থেকে বলেন, টরেন্টোর আসোয়া লেকরিচ হাসপাতালে আব্বার মৃত্যু হয়। স্থানীয় সময় বুধবার দিবাগত রাত তিনটায় তিনি মারা যান।
দেশসেরা একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি আসাদ চৌধুরী এর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্তজা ও মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা।
নেতৃবৃন্দ শোক বিবৃতি বলেন,দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন শেষে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন কবি।তিঁনি বাংলা সাহিত্যে তাঁর লিখনীর মধ্যে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
কবি আসাদ চৌধুরী আমাদের অতি প্রিয় কবি। আমাদের অভিভাবক। আমাদের সাহিত্যের প্রদর্শক। অপরিসীম ভালোবাসার এক মানুষ। তরুণ নবীন থেকে শুরু করে শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিবর্গ পর্যন্ত আসাদ চৌধুরীকে গাঢ়ভাবে ভালোবাসেন। ‘মাই ডিয়ার’ শব্দটির বাংলা জানি না। কবি আসাদ চৌধুরী মধুর ও আনন্দময় এক ব্যক্তি। ‘মাই ডিয়ার’ তার জন্য প্রযুক্ত।
মিতভাষী, সজ্জন, হৃদয়বান, ছান্দসিক কবি আসাদ চৌধুরীর মতো কেউ নেই দুই বাংলায়।
আসাদ চৌধুরীর কবিতায় আছে নতুন সুর। হৃদয়শালী আন্তরিক গীতিধর্মী তার কবিতা। লিরিকের সঙ্গে আধুনিকতার মিশ্রণ। ছন্দ উপলব্ধির সঙ্গে ছন্দহীনতার দ্রবণ তিনি কবিতার শরীরে ছড়িয়ে দিয়েছেন। তার কবিতায় আমরা মুগ্ধ পাঠক। দেশ, দেশের ঐতিহ্য, লোকায়ত জীবন, মুক্তিযুদ্ধ, প্রেম, সহজিয়া ভাব এসবই তার কবিতার উজ্জ্বলতা। আধুনিকতার নামে অকারণ দুর্বোধ্যতা তিনি এড়িয়ে চলেন। কবিতার প্রথম শর্ত হৃদয় সংবেদ। আসাদ চৌধুরীর কবিতা তার উজ্জ্বল উদাহরণ।
কবি আসাদ চৌধুরী ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের অন্যতম একজন কবি ও সাহিত্যিক ছিলেন আসাদ চৌধুরী। কবিতা ছাড়াও তিনি বেশ কিছু শিশুতোষ গ্রন্থ, ছড়া, জীবনী ইত্যাদি রচনা করেছেন। কিছু অনুবাদকর্মও তিনি সম্পাদন করেছেন। ১৯৮৩ সালে তার রচিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।
বেশকিছু দেশী-বিদেশী পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন আসাদ চৌধুরী। এরমধ্যে ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ২০১৩ সালে একুশে পদক লাভ করেন।
তাঁর মৃত্যুতে আমরা বাংলা সাহিত্যের একজন অভিভাবক হারালাম।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: