মো: মেহেদী হাসান (কাওছার), জবি প্রতিনিধি: বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে জয় বাংলা স্লোগানের মধ্য দিয়ে। কিন্তু ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগানের আলোকে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ স্লোগানটির আর্বিভাব হলো এ দেশে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমরা দেখতে পেলাম, যারা এতদিন আমাদের দেশকে স্বীকৃতি দেয়নি তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিতে থাকল। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, চীন, যুক্তরাষ্ট্র এদের মধ্যে অন্যতম।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজ আয়োজিত আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. জাফর ইকবাল বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে,তার স্ত্রী ও তিনজন ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। তার মধ্যে একজনের বয়স দশ বছর। দু’জন বিবাহিত ছেলের স্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে, এর মধ্যে একজন অন্ত:সত্ত্বা। এত বিভৎস হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে হতে পারে কিনা আমি জানি না।
সম্প্রতি ভারতের চাঁদে অবতরণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা দেখে আমার আমার দুঃখ লেগেছে যে কেন আমরা এখনো প্রযুক্তির দিক থেকে অগ্রসর হতে পারিনি। আমাদের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য ইলন মাস্কের কাছে নির্ভর করতে হয়েছে। আমার বিশ্বাস বঙ্গবন্ধু আজ বেঁচে থাকলে এটা হতে দিতেন না। টেকনোলজির দিকে বঙ্গবন্ধুর একটা বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। সে বিষয়ে তার লেখা ‘আমার দেখা নয়া চীন’ বইতে আলোকপাত করেছেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর চেতনায় যারা বিশ্বাসী সবাইকে একত্রে থাকতে হবে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে আমাদের দেশকে নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র হচ্ছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি যেন ক্ষমতায় থাকতে না পারে সেজন্য দেশি বিদেশি নানা চক্রান্ত চলছেই। এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন,আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বাস করি আমাদের মধ্যেই নানা ধরনের বিভাজন। কিন্তু যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ছিল তারা অত্যন্ত শক্তভাবে ঐক্যবদ্ধ। তাই আমাদের মধ্যে এই বিভাজন কীভাবে দূর করা যায় সবাই ঐকবদ্ধ হয়ে সেই চেষ্টা করতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজের সভাপতি অধ্যাপক ড. হোসেন আরা বেগমের সভাপতিত্বে ও সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার মোস্তাসির হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, অধ্যাপক লাইসা আহমদ লিসা ও স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজের সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. নাসির উদ্দীন।
প্রসঙ্গত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজ গত মার্চে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শীর্ষক এক কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজন করেন। সেই প্রতিযোগিতার চারটি শ্রেণিতে মোট ১৪জন বিজয়ী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদান ও সনদ তুলে দেওয়া হয় আজ।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: