• ঢাকা
  • সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২০ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কুমিল্লায় রেলওয়ে লেভেল ক্রসিং জনচলাচলে নিরাপত্তা ঝুঁকি


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ১২ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১২:২৭ পিএম
কুমিল্লায় রেলওয়ে লেভেল ক্রসিং
জনচলাচলে নিরাপত্তা ঝুঁকি

মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম, কুমিল্লা : রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ৩টি ট্রেন রুটে প্রায় সহস্রাধিক বৈধ-অবৈধ অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং পারাপারে মানুষের নিরাপত্তা ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে ‘‘সাবধান’’ এ লেভেল ক্রসিংয়ে কোন গেইটম্যান নেই, নিজ দায়িত্বে পারাপার হউন, পারাপারে দূর্ঘটনার জন্য রেল কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়’’ বলে বহু সর্তকবানী লিখে প্রচার-প্রবাকান্ডা চালালেও থেমে নেই প্রতিনিয়ত একাধিক ট্রেন দূর্ঘটনা। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এর দায় এড়ানোর কোন সুযোগ নেই বলে অভিমত একাধিক বিশ্লেষকদের। 

স্থানীয় রেলওয়ের একাধিক সূত্র জানায়, ঢাকা-লাকসাম- চট্টগ্রাম, লাকসাম-চাঁদপুর, লাকসাম-নোয়াখালী ট্রেন রুটের ৩টি লাইনে অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংগুলো দিয়ে প্রতিদিন কয়েক লাখ মানুষ পারাপারসহ অসংখ্য পন্যবাহী ছোট-বড় নানাহ যানবাহন চলাচল করছে। অথচ মরন দানব দূর্ঘটনা নিরসনে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় বিভাগের নীরব দর্শকের ভূমিকা যেন ভাবিয়ে তুলেছে এ অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষকে। 

আবার ওই ৩টি শাখা লাইনের কোথাও কোথাও জেলা- উপজেলা পরিষদ, এলজিইডি, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদসহ একাধিক দাতা সংস্থার অর্থায়নে রেললাইনের উপর দিয়ে কাঁচা-পাকা অসংখ্য সড়ক নির্মান করা হলেও ওইসব লেভেল ক্রসিংগুলো এখন জনচলাচলে মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে ওই সড়কগুলো নির্মাণে বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। বিশেষ করে প্রতি কিলোমিটার রেললাইনে একটি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। পূর্বাঞ্চলে প্রায় ১ হাজার ২’শ ৩০টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে প্রায় ৭’শ ১৯টি অবৈধ। মাত্র ৫’শ১১টি বৈধ লেভেল ক্রসিং থাকলেও অনেকাংশে গেইট কিপারসহ বেরিকেট সরঞ্জাম নেই। ইতি মধ্যে পূর্বাঞ্চলীয় দপ্তর লেভেল ক্রসিংগুলোকে কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে বৈধতা দিতে যাচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ন লেভেল ক্রসিংয়ে অস্থায়ী ভিত্তিতে ১ হাজার ৩৮ জন গেইটম্যান নিয়োগ দেয়ার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে রেল কর্তৃপক্ষ এবং গত কয়েকবছরে বহু লোকজনও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবুও কাটছে না এ অঞ্চলের মানুষের আতংক।  

সূত্রটি আরও জানায়, ঢাকা-লাকসাম-চট্টগ্রাম লাইনে বৈধ-অবৈধ প্রায় ৫ শতাধিক, লাকসাম-নোয়াখালী লাইনের ৫০ কিলোমিটার রেলপথে প্রায় অর্ধশতাধিক লেভেল ক্রসিং কিন্তু এর মধ্যে প্রায় ৪০টি অবৈধ, লাকসাম-ফেনী পর্যন্ত রেললাইনে প্রায় শতাধিক ও লাকসাম-চাঁদপুর লাইনে প্রায় অর্ধশতাধিকসহ ৩টি লাইনেই লেভেলক্রসিংগুলো বিদ্যমান থাকলেও সিংহভাগই অবৈধ এবং গেইটম্যান নেই। আবার লাকসাম রেলওয়ে জংশনের প্রায় ৩’শ গজ উত্তরে ৬/৭টি রেললাইনের উপর দিয়ে পৌরসভার অর্থায়নে পাকা সড়কটি অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষসহ অসংখ্য যানবাহন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এখনও টনক নড়েনি। এ এলাকায় রয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের একাধিক বিভাগীয় দপ্তর, লোকোসেডসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা কেন্দ্র।

বিশেষ করে ঢাকা-লাকসাম-চট্টগ্রাম রেললাইনে মঞ্জুরীকৃত বৈধ লেভেল ক্রসিং ২’শ৪২ টি গেইট কিপার থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ৩৬ জন এবং বাকী ২’শ৬টি গেইটম্যান নেই। এছাড়া বৈধ লেভেল ক্রসিং ৪’শ ৩৬ এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের সীমানায় ২’শ ৭৩ এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ১’শ৬১টি। ওই লাইনে ৮’শ ১৪টি অবৈধ লেভেল ক্রসিং রয়েছে এর মধ্যে ঢাকায় ৪’শ৩১টি এবং চট্টগ্রামে ৩”শ৮৩টি বিদ্যমান।  

সূত্রগুলো আরও জানায়, ওই ৩টি রেলওয়ে লাইনে গত ৫ বছরে স্বাভাবিক- অস্বাভাবিক দূর্ঘটনার হিসাব নিলেই পাওয়া যাবে মরন দানবের লোমহর্ষক চিত্র এবং কয়েক’শ মানুষের প্রানহানীসহ কয়েক কোটি টাকার সরকারী-বেসরকারী সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির বিবরন। বিশেষ করে কিছুদিন আগে লাকসাম-চট্টগ্রাম রেলওয়ে লাইনের হাসানপুর নামকস্থানে এক লোমহর্ষক স্মরণ কালের ট্রেন দূর্ঘটনায় তার প্রমান। তবুও থেমে নেই দূর্ঘটনা। অথচ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কর্মকর্তারা এখনও নিরব দর্শক।

ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও সদ্য মন্ত্রীসভা একনেকে পাশকৃত ময়নামতি বিভাগীয় শহর ছাড়াও দেশের দক্ষিন-পূর্বাঞ্চলের অসংখ্য জেলা-উপজেলার সাথে যোগাযোগের মাধ্যম ওইসব লেভেল ক্রসিং। ওই লাইনগুলোর লাকসাম পৌরশহরের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংগুলোর নিরাপত্তা ঝুঁকির চিত্র আরো ভয়াবহ। 
এ ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরের কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও কোন জবাব নেয়া সম্ভব হয়নি তবে কিছু কিছু  ক্ষেত্রে একাধিক দপ্তরের বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ভিন্ন ভিন্ন মতামত পাওয়া গেলেও বাস্তবতার সাথে কোন মিল নেই। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image