• ঢাকা
  • শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

চাটমোহরে সেচযন্ত্র মালিক ও বোরো চাষীদের দ্বন্দ্বে কৃষক বিক্ষোভ 


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ০৯ জানুয়ারী, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৫:২০ পিএম
চাটমোহরে সেচযন্ত্র মালিক ও
বোরো চাষীদের দ্বন্দ্বে কৃষক বিক্ষোভ 

হেলালুর রহমান জুয়েল, চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি: চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতেই পাবনার চাটমোহরে সেচযন্ত্র মালিক ও চাষীদের মধ্যে দ্ব›দ্ব শুরু হয়েছে। সেচ চার্জ বাবদ আবাদকৃত ধানের চার ভাগের এক ভাগ আদায়কে কেন্দ্র করে কৃষক ও বোরো চাষীদের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব। এ নিয়ে উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের বোয়ালমারী বিলে সেচযন্ত্র মালিক খেতে পানি সেচ দিচ্ছেনা বলে কৃষকদের অভিযোগ।

এ কারণে বোয়ালমারী ও আশপাশের বিলের শতাধিক কৃষক গতকাল সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। তারা সরকার নির্ধারিত সেচ চার্জের বিনিময়ে বোরো আবাদের এক দফা দাবি জানান। বোরো চাষী মহরম হোসেন,আঃ সালাম,আঃ হামিদসহ অন্যরা জানান,বোয়ালমারী বিলে সাবেক এমপি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড.একেএম সামসুদ্দিন খবিরের গভীর নলকূপ রয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ আবাদকৃত ধানের ৪ ভাগের এক ভাগ সেচ চার্জ হিসেবে দাবি করলে কৃষকদের সাথে তাঁর দ্বন্দ্ব শুরু হয়। 

এই সমস্যা সমাধানের জন্য গত ৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে সেচযন্ত্র মালিক সামসুদ্দিন খবির,উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ হামিদ মাস্টার,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মমতাজ মহল,উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুমবিল্লাহসহ অন্যরা বৈঠক করেন। সেখানে চাষীদের পক্ষের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

সভায় উভয় পক্ষের মতামত ও আলোনান্তে সিদ্ধান্ত দেন,প্রতি বিঘা জমির সেচ চার্জ হিসেবে কৃষক সেচ মালিককে ২ হাজার ২০০ টাকা প্রদান করবে। একইসাথে সেচযন্ত্র মালিক চলতি বোরো মৌসুমে গভীর নলকূপটি বোরো চাষীদের কাছে ছেড়ে দিবেন। তারা একটি কমিটি গঠণ করে সেচযন্ত্র পরিচালনা ও আবাদ সম্পন্ন করবেন। 

কৃষককেরা অভিযোগ করেন,এই সিদ্ধান্তের পর বোরো চাষীরা সেচযন্ত্র মালিকের সাথে দেখা করে গভীর নলকূপটি বুঝে দেওয়ার কথা বললে,সেচযন্ত্র মালিক কিছু শর্তারোপ করেন। এ নিয়ে ফের দ্ব›দ্ব শুরু হয়। ফলে চাষী বোরো আবাদে নামতে পারেন না। ফলে আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ফের সমস্যার উদ্ভব হওয়ায় সোমবার (৭ জানুয়ারি) বোয়ালমারী বিলের শতাধিক কৃষক চাটমোহর পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন। তারা দ্রæত সেচযন্ত্র চালু ও বোরো আবাদের পরিবেশ তৈরির দাবি জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মমতাজ মহল সেচযন্ত্র মালিকের প্রতিনিধি ও কৃষক প্রতিনিধিদের নিয়ে তাঁর দপ্তরে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে কৃষকদের দাবি-দাওয়া জানার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেচযন্ত্র মালিক এ্যাড.একেএম সামসুদ্দিন খবিরের সাথে মোবাইল ফোনে আলোচনা করেন। আলোচনা শেষে ৪টি শর্তে সেচযন্ত্র মালিক আবাদে যেতে রাজি হন। চাষীরাও শর্ত মেনে বোরো আবাদ করবেন বলে জানান। বৈঠকে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইছাহক আলী মানিক,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা পারভীন,কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুমবিল্লাহ,বিএডিসি’র পানাসি প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী মামুন হোসাইন,ছাইকোলা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান নুরু,থানার এসআই রফিকুল ইসলাম,প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হেলালুর রহমান জুয়েল,গভীর নলকূপের সুপারভাইজার তয়জাল হোসেন,কৃষক প্রতিনিধি আঃ সালাম,আঃ হামিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ৪টি শর্তের মধ্যে রয়েছে,বোরো চাষীরা কমিটির মাধ্যমে সেচযন্ত্রের সবকিছু  গ্রহণ করবে এবং আবাদ শেষে মালিককে বুঝিয়ে দেবেন,প্রতিমাসের বিদ্যুৎ বিল মালিকের নামে পরিশোধ করতে হবে,গভীর নলকূপের বিদ্যুৎ সংযোগ,৪জন চালক ও ১জন সুপারভাইজারের বেতন,সেচযন্ত্র সংস্কার ও অন্যান্য খরচ বাবদ চাষীরা সেচযন্ত্র মালিককে ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা প্রদান করবেন এবং সরকার নির্ধারিত সেচ চার্জের অতিরিক্ত চার্জ গ্রহণ করা যাবেনা। আগামী ১১ জানুয়ারি সেচযন্ত্র মালিক ও বোরো চাষীদের মধ্যে এ বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।  

পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মমতাজ মহল তাঁর দপ্তরের সামনে উপস্থিত কৃষকদেরকে ৪টি শর্ত পড়ে শোনান এবং কৃষক তা মেনে অবস্থান কর্মসূচি শেষ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মমতাজ মহল বলেন,সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। উবয় পক্ষ এতে সম্মত আছে। আশা করছি বোরো আবাদ নির্বিঘেœই হবে। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image