• ঢাকা
  • শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

কিছু নিত্য পণ্য সরকার চাইলে ন্যায্য মূল্যে দিতে পারে


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বুধবার, ০৬ এপ্রিল, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১০:১০ এএম
নিত্য পণ্য
চাল ডালের ফাইল ছবি

সুমন দত্ত

নিত্য পণ্যের বাজার দরে স্থিতিশীলতা আসুক। দেশবাসী এই আশা করলেও বাস্তবে তা সম্ভব হয় না । কেন হয় না? এই প্রশ্নের জবাব এক কথায় দেওয়া যাবে না। তারপরও জনগণের আশা সরকার বাজার ব্যবস্থাটা নিয়ন্ত্রণ করবে। বিশেষ করে নিত্য পণ্যের বাজার দর।

দেশের বাজারে কিছু কিছু খাদ্য পণ্যের দাম অনেক বেশি উঠা নামা করে। যেমন কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ। আজ যে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২৫-৩০ টাকা। একদিনের ব্যবধানে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০০-১২০ টাকায়। আবার একদিনের ব্যবধানেই হয়ে যায় ৫০-৬০টাকা। দেশের বাজারে কাঁচা মরিচের এই পরিবর্তন অন্য নিত্য পণ্যের সঙ্গে মেলে না। অন্যদিকে পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি করতে হয়। আমদানি বন্ধের ঘোষণা মাত্র বাজারে এক লাফে পেঁয়াজে দাম কেজি প্রতি ৬০-৭০ টাকা হয়ে যায়। আমদানি নিয়মিত থাকলে দাম কেজি প্রতি ২৫-৩০ টাকা থাকে।
 
অন্যদিকে কিছু খাদ্য পণ্যের দাম একবার বাড়লে তা আর কমে না। যেমন মাংসের দাম। বছরের শুরুতে খাসির মাংসের দাম ছিল কেজি প্রতি ৮০০ টাকা। তিন মাসের ব্যবধানে দাম বেড়ে হয় ১০০০-১১৫০ টাকায়। খাসির মাংসের দাম আর কমবে না। গত কয়েক বছর বাজার মনিটর করে এমনটাই জানা গেছে।

 আজকের দিনে সরকার যদি বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে চায় কিংবা বিভিন্ন পণ্যের বাজার দরে স্থিতিশীলতা আনতে হয় তবে পণ্যে ভেদে বিচার বিশ্লেষণ করে পদক্ষেপ নিতে হবে । দেশে উৎপাদিত পণ্যে সকলের চাহিদা পূরণ করছে কিনা, সেটি আগে জানতে হবে। তারপর জানতে হবে বিদেশ থেকে আমদানি পণ্য কোনগুলো। 

বিদেশি পণ্যের একটা তালিকা তৈরি করতে হবে। এবার সেই তালিকা ধরে সরকারকে পণ্যের দাম বেধে দিতে হবে। পাশাপাশি সরকারকে বলতে হবে এর বেশি দামে পণ্য বিক্রি করা যাবে না। 

তেমনি দেশে উৎপাদিত খাদ্য পণ্য কৃষক কত টাকায় আড়তদারদের বিক্রি করছেন,পাইকারি বাজারে তার দাম কত হওয়া উচিত, সেটি ঠিক করে দিতে হবে। বিভিন্ন অজুহাতে মধ্যস্বত্ত্ব ভোগীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবে, এটা কখনই মেনে নেওয়া যায় না। 

 অত্যন্ত দু:খের বিষয় সরকার এ কাজ গুলো করতে পারছে না। এ কারণে বাজার চলে গেছে অতি মুনাফা-লোভী গোষ্ঠীর দখলে। 

সরকার চাইলে কি না হয়। মোবাইল কোর্ট বসিয়ে দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা আনা যায়নি। জরিমানা করেও ব্যবসায়ীদের মানসিকতায় বিন্দুমাত্র পরিবর্তন করা যায়নি। 

তাই এই অস্ত্র গুলো এখন ভোতা। ব্যবসায়ীদের মানসিকতা পরিবর্তনের জন্য শাস্তির বিকল্প কিছু ভাবতে হবে।

 যেমন ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয় এমন কৌশল সরকারকে নিতে হবে। সস্তায় ভালো পণ্য যারা বিক্রি করতে পারবে তাদেরকে সরকার বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিবে। সেটার জন্য সরকারকে টার্গেট নির্ধারণ করে দিতে হবে। 

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সবকিছুর মধ্যে প্রতিযোগিতা উন্নতির বিকাশ ঘটায়। আর এ স্থলে যদি একক কিংবা গুটিকতক ব্যক্তি বিশেষের হাতে ব্যবসার ক্ষমতা চলে যায়,  জনগণ তখন ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়ল। বাংলাদেশ আজ এই সমস্যার মুখোমুখি।

আজকাল দেশের বাজারে সয়াবিন নিয়ে যা হচ্ছে তাতে এমন চিত্র উঠে এসেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় দেশে সিটি গ্রুপ, টিটি গ্রুপ ও বসুন্ধরা গ্রুপ এরাই মূলত সয়াবিন তেলের ব্যবসা করে। বিদেশ থেকে এরাই সয়াবিন তেল আমদানি করে থাকে। এর বাইরে কেউ তেল আমদানি করে না। কিংবা বিদেশি কাউকে দেশের বাজারে তেল বিক্রি করতেও দেয় না। 

 এই তিন গ্রুপ  মিলে দেশে তেলের বাজারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করে দিচ্ছে। এখানে কোনো প্রতিযোগিতা হচ্ছে না। বাণিজ্য মন্ত্রীকে এই তিন গ্রুপের মালিক পক্ষ বলছে তেলের দাম না বাড়ালে তারা তেল বিক্রি করবে না। এভাবে চালের ব্যবসা কিংবা চিনির ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে হাতে গোনা কয়েকটি গ্রুপ। যারা আবার এই তেলের ব্যবসাতেও আছে।

 একটা সময় নিত্য পণ্য সরকার রেশন সপের মাধ্যমে বিক্রি করত। সেই দাম থাকতো স্থিতিশীল।গরীব, মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত সবাই রেশন সপ থেকে চাল ডাল চিনি গম ঘি ন্যায্য মূল্যে ক্রয় করত। যেদিন সরকার এসব রেশন সপ বন্ধ করে দিল, সেদিন থেকে এসব পণ্যের বাজার মুনাফাখোরদের কাছে চলে গেল। 

এখন সময় হয়েছে টিসিবিকে রেশন সপে রূপান্তর করা। ট্রাক দিয়ে নিত্য পণ্য বিক্রির সুফল পাচ্ছে না জনগণ। কিছু কিছু পণ্যের ক্রয় বিক্রয় সরকারকে নিতে হবে। যেটা আগে এক সময় ছিল। সেটি পুনর্বহাল না হলে জনগণ দাম বৃদ্ধির জাঁতাকলে পড়ে মারা যাবে। 
 

ঢাকানিউজ২৪.কম / সুমন দত্ত

আরো পড়ুন

banner image
banner image