• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

চাটমোহরে পুকুর খনন করে তৈরী হচ্ছে অবৈধ ইটভাঁটা


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ০২ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:৪৯ পিএম
চাটমোহরে পুকুর খনন করে তৈরী হচ্ছে
অবৈধ ইটভাঁটা

হেলালুর রহমান, চাটমোহর (পাবনা) সংবাদদাতা : থামছেনা পুকুর খনন, দেখছেনা প্রশাসন। পাবনার চাটমোহরে কৃষি জমিতে চলছে পুকুর খননের মহোৎসব। 

দুই বা তিন ফসলি জমিতে পুকুর কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। এসব কৃষি জমির মাটি খাচ্ছে অবৈধ ইটভাটা। এ উপজেলার অধিকাংশ ইটভাটার নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। 

এছাড়া জেলা প্রশাসকের অনুমোদনসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও নেই। এ উপজেলার বিভিন্ন বিল আর সমতল জমির উর্বর মাটি খাচ্ছে এসব অবৈধ ইটভাঁটা। প্রতিদিন উর্বর জমির মাটি কেটে একটি চক্র পাটাচ্ছে ইটভাঁটায়। মাটি পরিবহণের কারণে নষ্ট হচ্ছে সরকারি রাস্তা। 

ইটভাঁটায় জমির মাটির পাশাপাশি পুড়ছে কাঠও। কিন্তু কোন প্রতিকার মিলছেনা। কৃষি জমিতে পুকুর খনন করা অপরাধ। কিন্তু এ অপরাধের সাথে জড়িতরা নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে পুকুর খনন করে যাচ্ছে। 

স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এ অপরাধ করা হচ্ছে বলে একাধিক সূত্র জানায়। উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন সরকার ৬ বিঘা জমিতে পুকুর খনন করছেন। এ পুকুর কেটে মাটি বিক্রি করছেন সাবেক ইউপি সদস্য কাজী মোশারফ। 

বোরহান উদ্দিন সরকার বললে, কোন অনুমোদন নেইনি,তবে প্রশাসনও কিছু বলছেনা। বিষয়টি নাকি এমপি ও ইউএনও’র নলেজে দিয়েছেন। এদিকে পাশর্^ডাঙ্গা ইউনিয়নের মহেলা এলাকায় জনৈক প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে পুকুর খনন করে সাটি এনে চাটমোহর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অদূরে বিশাল খাল ভরাট করছেন। রাতে মাটিবাহী ট্রাক্টরের শব্দে তিক্ত-বিরক্ত এলাকাবাসী। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখানেও নিশ্চুপ। 

অবৈধ ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো যেমন বন্ধ হচ্ছেনা,তেমনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর খননের উৎসব চলছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। 

সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়,ফসলি জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ ইটভাটায় দিনরাত কাঠ পুড়ছেই। আইনের তোয়াক্কা না করে পূর্ণোদমেই চালানো হচ্ছে এসকল অবৈধ ইটভাটা। কৃষি জমি বিনষ্ট,ভাটায় কাঠ পোড়ানো,নিয়মনীতি লংঘন ও পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার বিষয় বিবেচনা না করে চলতি মৌসুমে ইট পোড়ানো শুরু হয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র,ইট পোড়ানোর লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের সার্টিফিকেট এমন কি ভ্যাট-আয়কর প্রদানের কাগজপত্র ছাড়াই ভাটার মালিকরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আর সকলকে ম্যানেজ করে ২৪ ঘণ্টা ইট পোড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

এসব অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে প্রশাসন ও  পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। কৃষিজমি বিনষ্ট করে গড়ে ওঠা এসব অবৈধ ইটভাটা দীর্ঘদিন ধরে কিভাবে চালু রয়েছে, এবিষয়ে বিশিষ্টজন ও পরিবেশবাদীরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। ইটভাটার ইট পরিবহনের কারণে রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। চলাচলের রাস্তা ভেঙ্গে পড়ায়  চরম ভেগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের। কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা।

উপজেলার ধরমগাছা ব্রিজের পাশে গুমানী নদী তীর দখল করে গড়ে ওঠা একটি ইটভাটায় অবাধে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে আর ফসলি জমির মাটি খাচ্ছে। ভাটার মালিকরা অবৈধ উপায়ে ফসলী জমি কেটে মাটি সংগ্রহ করে থাকে।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী বলেন, লিখে কি করবেন। সকলকে ম্যানেজ করেই বছরের পর বছর চলছে অবৈধ ইটভাটা। ফসলি জমি কেটে দেদারছে পুকুর বানানো হচ্ছে। 

এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মমতাজ মহল দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন,ফসলি জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা খবর পাওয়া মাত্র অভিযান চালাচ্ছি। আপনারাও তথ্য দেন, অবশ্যই পদক্ষেপ নেবো। 

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image