• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০২ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

গৌরীপুরে প্রবল বর্ষণে ৩০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: সোমবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ০৪:৪৩ পিএম
গৌরীপুরে প্রবল বর্ষণে ৩০ কোটি টাকার
ফসলের ক্ষতি

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ১৪ঘন্টার টানা প্রবল বর্ষণে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় ৩০কোটি টাকার ধান ও শাকসবজি। এতে প্রায় ১ হাজার ৪শ কৃষকের ধান ও ৪২৭ জন কৃষকের শাকসবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকাল থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত প্রবলবর্ষণে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার কারণে ধানের জন্য বিখ্যাত চাতুলবিল, কৈট্টাপুরি বিল, সিধলং বিল, নওয়াগাঁর বিল, ভালকীর বিল, ইছুলিয়া বিল, বালুয়া, ভালুকা, আগ্রাইল, ডালিয়া, জলবুরুঙা, হাঙ্গাল, চৌকাসহ উপজেলার ৩৭টি বিলের সব ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। 

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি মাঠ পরিদর্শন করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নীলুফার ইয়াসমিন জলি, উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নীলুফার ইয়াসমিন জলি জানান, আমন মৌসুমে এ উপজেলায় ২০ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে ধান রোপণ করা হয়। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ১ হাজার ৩৩০ হেক্টর, উফশী জাতের ১৮ হাজার ৫৪০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৮৫০ হেক্টর। এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির রোপিত ধান বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ২৫ কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে। 

উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, এ উপজেলার প্রায় ৮০ হেক্টর জমির শাকসবজি শতভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। বিশেষ করে করলা, শসা, শিম, চাল কুমড়া, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, বরবটি, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙ্গা, দুন্দল, আগাম জাতের টমেটো, ডাটা একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে কৃষকরা প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে কৃষক।

সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের ঝলমলা গ্রামের মো. মিলন মিয়ার পুকুরপাড়ে রোপিত শাক-সবজি, রামগোপালপুর ইউনিয়নের দামগাঁও গ্রামের মো. হাবিবুল্লাহ ১একর ২০শতাংশ রোপিত চাল কুমড়া ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। 

তিনি জানান, প্রায় ২লাখ টাকা খরচ করে চাল কুমড়া ক্ষেত তৈরি করেছিলেন। মাত্র দু’দিন চাল কুমড়া উত্তোলন করছেন। ক্ষেতে থাকা সহ¯্রাধিক কুমড়াও পচে যাচ্ছে। সেগুলোও উত্তোলন সম্ভব হচ্ছে না। বৈরাটি গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, তার কাঁকরুল ক্ষেতে পানি উঠায় গাছ মরে যাচ্ছে। মাওহা ইউনিয়নের কিল্লাতাজপুরের কৃষক শাহাবুব আলম জানান, তার ৩টি ধানক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। শাক-সবজি সব নষ্ট হয়ে গেছে। রামগোপালপুর গ্রামের কৃষক আহাম্মদ মিয়ার লাউক্ষেত, পেঁপে বাগান ও সিম ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তিনি।

গৌরীপুর পৌর শহরের সতিষা গ্রামের কৃষক মো. মফিজ উদ্দিন জানান, বিলে কাঁচি নিয়ে যাওয়ার কোনো অবস্থা নেই। পুরো বিলের সব ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আব্দুর রশিদ জানান, তার রোপিত এক একর ২৬শতাংশ জমির ধানক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অচিন্তপুর ইউনিয়নের আনিসুজ্জামান জানান, সুগন্ধী জাতের ৭০শতাংশ ও স্থানীয় জাতের ৪৭শতাংশ জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। অচিন্তপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জায়েদুর রহমান জানান, যতদূর চোখ যায়, সবই পানির নিচে। কৃষকের মাঝে হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে। কৃষক নিঃস্ব হয়ে গেছেন। সহনাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন কাদের রুবেল জানান, তার ইউনিয়নের শতকরা ৮০শতাংশ কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ। মইলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মো. শাহজাহান জানান, সূর্য্যরেকোনা, মেসিডেঙ্গীসহ মইলাকান্দা ইউনিয়নের সবগ্রামেই ধান নষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোফাজ্জল হোসেন খান জানান, বন্যায় কৃষক ও মাছচাষীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।

ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন

আরো পড়ুন

banner image
banner image