মোঃ জাহিদুল ইসলাম ( বাকেরগঞ্জ) বরিশাল : সম্প্রতি বাকেরগঞ্জ উপজেলার ছোট বড় সকল জলাশয়ে ব্যবহার বেড়েছে অবৈধ চায়না দুয়ারী জালের। যা মৎস্য সম্পদ ধ্বংসের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরুপ।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে মাছ আহরনের জন্য নতুন এক জালের ব্যবহার বেড়েছে। যা নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের মত মিহি ও হালকা সুতোয় তৈরি। এই জালে ছোট প্রজাতির মাছ থেকে বড় মাছ ও আটকাতে সক্ষম।
জেলেরা এই জালে মাছ ধরতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। কিন্তুু মৎস্য বিশেষজ্ঞ সহ সংশ্লিষ্টরা মনে করেন এই জাল মাছের যে কোন প্রজাতি ধ্বংস করতে কারেন্ট জালের মতই ক্ষতিকর।
বাংলাদেশে এই জালের ব্যবহার শুরুর দিকে মূলত পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকার জলাশয়ে ছিল। কিন্তুু পর্যায় ক্রমে এখন সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে।
এটিকে জাল হিসেবে বলা হলেও মুলত এটি মাছ ধরা এবং আগামী প্রজন্মের জন্য মৎস্য সম্পদ কে ধ্বংস করার জন্য একটা বিশেষ ফাদ।
এই জালের বুননে একটা গিট থেকে আরেকটি গিটের দূরত্ব খুব কম।যার কারণে এর ভিতরে একবার মাছ ঢুকলে আর বেড় হতে পারে না। স্হান ভেদে এই জালকে চায়না দূয়ারী এবং ম্যাজিক জাল বলা হয়।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ নাসির উদ্দীন বলেন এই চায়না দূয়ারী জাল মৎস্য সম্পদ ধ্বংসের জন্য অন্যতম কারন। নিষিদ্ধ জালের তালিকায় চায়না দূয়ারী জালের নাম না থাকলেও জালের বুননের কারনে এই জাল মারাত্মক হুমকি।
বাংলাদেশেরে মাছ ধরার মেস সাইজ একটা গিট থেকে আরেকটি গিঁটের দূরত্ব সারে চার সেন্টিমিটার। এর চেয়ে কম দূরত্ব হলে সেটা দেশের প্রচলিত আইনে অবৈধ এবং নিষিদ্ধ।
এজন্য আমাদের দেশে কারেন্ট জালের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঠিক একই কারনে চায়না দূয়ারী জাল ও নিষিদ্ধ।
নাম চায়না দূয়ারী হলেও নিষিদ্ধ এই জাল বাংলাদেশই তৈরি হয়। সাধারণত এই জাল ৫০ থেকে ১০০ ফুট পর্যন্ত এই জাল লম্বা হয় এবং এক থেকে দেড় ফুট প্রস্হ হয়।
লোহার চার কোনা অনেক গুলো ফ্রেম দিয়ে এই জাল তৈরি করা হয় ও সূক্ষ্ণ সুতোয় তৈরি বিধায় একবার যেকোন মাছ ঢুকলে আর বেড় হতে পারে না। তাই জীব বৈচিত্র্য ও মৎস্য সম্পদ ধ্বংসের জন্য মারাত্মক হুমকি।
চায়না দূয়ারী জাল একবার ব্যবহারে যে পরিমাণ মাছ ধরা যায় তা অন্য জাল একাধিক বার ব্যবহারেও পাওয়া যায়না। তাই জেলেরা এই জাল ব্যবহারে অনেক খুশি ও লাভবান।
সাম্প্রতিক বর্ষা মৌসুমে বাকেরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের উম্মুক্ত জলাশয় , বিল, এবং খালেএই জালের ব্যবহার বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন চায়না দূয়ারী জালের ব্যবহার বন্ধ করা না হলে মাছের বিপন্ন প্রজাতি সহ সকল প্রকার জলজ প্রানী হুমকির মুখে পড়বে।
দেশের প্রচলিত নিষিদ্ধ জালের তালিকায় চায়না দূয়ারী জালের নাম না থাকলেও জালের মাপের প্রচলিত ফাস অনুযায়ী আমাদের দেশে এই জাল দিয়া মাছ আহরণের কোন সুযোগ নাই।
আমাদের দেশে গত কয়েক দশকে ১০০ এর বেশি মাছের প্রজাতি হাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে এই জালের সর্বাত্মক ব্যবহারে খুব তারাতারি হাড়িয়ে যাব মাছের আরো অনেক প্রজাতি।
তাই মৎস্য সম্পদ রক্ষায় প্রশাসন সহ সকলকে এই চায়না দূয়ারী জাল বন্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: