সুমন দত্ত: বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে? এ নিয়ে কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশের মতো ক্ষুদ্র দেশগুলোর ভাগ্য নির্ধারিত হয় সুপার পাওয়ার গুলোর চায়ের টেবিলে। গত কয়েকদিনের ঘটনায় সেই লক্ষণ স্পষ্ট।
বিএনপির শীর্ষ নেতারা ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন। উভয় রাজনৈতিক পার্টির আলোচনা ছিল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে। নির্বাচন কিভাবে হবে সেই কূটনৈতিক যুদ্ধ শুরুর ইঙ্গিত এই বৈঠক গুলো।
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আমেরিকা ও ভারতের কূটনৈতিক যুদ্ধে কে জেতে তার উপর। ভারত আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়ে মাঠে কাজ করছে। অন্যদিকে আমেরিকা বিএনপির পক্ষ নিয়েছে এমনটা ভাববার মোটেও অবকাশ নেই। আর এটাই কূটনৈতিক যুদ্ধে ভারত জয়ী হবার প্রধান লক্ষণ। আর আগামীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বহাল তবিয়তে থাকবে তার ইংগিত। রাশিয়ার জাহাজের মতো অবস্থা হবে না আওয়ামী লীগের পরিণতি।
উরসা মেজর ও স্পার্টা-১ বিতর্ক আমেরিকা যেভাবে বাংলাদেশ ও ভারত কে তাড়া করেছে, এমন কাণ্ড জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শুরু করলে আওয়ামী লীগের খবর আছে।
বাংলাদেশে গত দুই টার্মে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। ভারত ছাড়া কোনো দেশ ওই দুই নির্বাচনকে সুষ্ঠু বলে মন্তব্য করেনি। তবে সরকারকে সমর্থন করে গেছে সবাই।
আর আওয়ামী লীগ সেটাকেই ভিত্তি করে নিজেদের বৈধতা জাহির করছে সবার কাছে। এখন সত্যিকার অর্থে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ বিদায়। এটা ভারতের কাছে পরিষ্কার, এমন কি আমেরিকার কাছেও।
রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে একটা বিভক্তি কাজ করছে। সেই বিভক্তি যদি কঠিন হয় তবে আমেরিকা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে কোনো ছাড় দেবে না। আর যদি বিভক্তি নরম হয় তবে আমেরিকা ভারতের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কোনো কূটনৈতিক যুদ্ধে যাবে না। বিষয়টি ভারতের ওপরই ছেড়ে দেবে।
যদি নির্বাচনের বিষয়টি ভারতের ওপর চাপে তাহলে দেশটি কি করবে? ভারত চাইবে বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে। সেক্ষেত্রে তাদের প্রচেষ্টা থাকবে সাবেক বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে একটি লোক দেখানো নির্বাচন করানো। কয়েকটা আসনও দিতে পারে তাদের।
আন্দোলন করে সরকার পতনের ক্ষমতা বিএনপির নেই। এমনকি আওয়ামী লীগ কে ক্ষমতায় রেখে, বিএনপি নির্বাচনে জিতবে, এমন আশা দুরাশা। সেক্ষেত্রে একটাই অপশন, ভারতের সঙ্গে দেন দরবার করে যদি কিছু পাওয়া যায়। সেজন্যই বিএনপি ভারতের ডাকে সাড়া দিয়ে বৈঠক করে।
নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসবে, আমেরিকা ও পশ্চিমা চাপ সরকারের ওপর ততটাই বাড়বে। সময়ই বলে দেবে এই চাপ আওয়ামী লীগ সহ্য করতে পারবে কিনা। রাশিয়ান জাহাজের চাপ সহ্য করতে পারেনি বাংলাদেশ। পরে ভারতও পারেনি। এমনকি চীনও পারেনি। শেষ মেষ বাংলাদেশের এক কোম্পানি আন্তর্জাতিক সমুদ্র এলাকা থেকে অন্য জাহাজে করে মাল খালাস করে।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এমনটা হলে দেখা যাবে, নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে এমন শক্তি ক্ষমতায় এসেছে যারা বাংলাদেশেরই কোনো এক কোম্পানি। সেই কোম্পানির অধীনেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। চলতি বছরের শেষে হয়ত জানা যাবে সেই কোম্পানি কাদের নিয়ে তৈরি।
লেখক: সাংবাদিক তারিখ ২৫-৩-২০২৩ সময় সকাল ৮ টা
ঢাকানিউজ২৪.কম / এসডি
আপনার মতামত লিখুন: