ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে আমনের চাষাবাদের ভরা মৌসুম চলছে। আষাঢ় শ্রাবণ মাসে জমিতে আমনের চারা রোপন শেষ করেছেন এ অঞ্চলের কৃষক। জমিতে চারা রোপনের পর খেতে সার প্রয়োগ ও নিড়ানি দেয়াসহ পরিচর্যার সময় এখন। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে টানা ভারী বৃষ্টিতে আমন ধান খেতে গলায় গলায় পানি। অনেক জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে নিচু জমির ফসল নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়ছেন ধান চাষিরা। পাশাপাশি আমনের ভরা মৌসুমে কাজ না থাকায় কষ্টে রয়েছেন কৃষি শ্রমিকরা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে বেশিরভাগ আমন খেত ডুবু ডুবু অবস্থা। নিচু ও নদী তীরবর্তী এলাকায় কৃষকের আমনের খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিতে নিমজ্জিত খেত নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন চাষিরা। শাহ বাজার এলাকার ধানচাষি শাহজাহান আলী বলেন, আমি এবারে ২২ বিঘা জমিতে আমন আবাদ করেছি। এরমধ্যে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে ১১ বিঘা জমির ধানখেত পানিতে তলিয়ে আছে। আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে পানি নেমে না গেলে ধানগাছ পঁচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছি।
বৃষ্টিতে ফসলের খেত তলিয়ে যাওয়ায় ভালো নেই কৃষি শ্রমিকেরাও। কৃষি শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, ভাদ্র মাসে আমনের খেতে নিড়ানি দেয়া সহ শাক-সবজির খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটে তাদের। এই সময়ে তাদের আয় রোজগারও বেশি হয়। কিন্তু এবারে গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টির কারণে প্রচুর পানি জমেছে ধান ও সবজির খেতে। ফলে বসে বসে অলস সময় পার করতে হচ্ছে। কাজ না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে টানাটানিতে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষি শ্রমিকেরা।
কৃষি শ্রমিক নুরুজ্জামান মিয়া বলেন, আমি অন্যের জমিতে দিনমজুরি করে সংসারের খরচ চালাই। জমিতে চারা রোপনের পর ধানখেতে নিড়ানি দেওয়ার কাজ করে সংসার চলতো। গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির কারণে বর্তমানে জমিতে অনেক পানি হয়েছে। আমরা আর কাজ করতে পারছি। কাজ না থাকায় ধারদেনা করে সংসারের খরচ জোগাতে হচ্ছে। জানিনা আরো কতদিন বৃষ্টির কারণে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে সুখবর মেলেনি আবহাওয়া অফিস থেকেও।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুহিন মিয়া জানান, গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসেও রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হওয়ার সহ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পরবর্তী তিন দিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
ঢাকানিউজ২৪.কম / জেডএস
আপনার মতামত লিখুন: