
বিজয় কর রতন, মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলায় অলওয়েদার সড়কে গণডাকাতি হওয়ায় দুই দিন পেরিয়ে গেলেও মামলা হয়নি। এ সময়ের মধ্যে কোনো অভিযুক্তকেও আটক করা যায়নি। মামলা না হওয়ার বিষয়ে পুলিশের ভাষ্য,ভুক্তভোগীদের কেউ এখনো পর্যন্ত অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেননি। মামলার ব্যাপারে তাদের মধ্যে অনাগ্রহ কাজ করছে।অভিযোগ করে কি লাভ,এমন ধারণায় থানামুখী হতে আগ্রহী নয় বলে মন্তব্য ভুক্তভোগীদের।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামইন হাওর উপজেলা। হাওরে এত দিন সড়ক যোগাযোগ ব্যাবস্থা ছিল না।কয়েক বছর আগ থেকে অলওয়েদার সড়ক নির্মাণের মধ্য দিয়ে তিন উপজেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যাবস্থা শুরু হয়। অলওয়েদার সড়কটি পর্যটক আকর্ষণ করে।
সড়কটি ঘিরে, বিশেষ করে বর্ষায় সারাদেশ থেকে হাজার হাজার পর্যটক আসেন।এতদিন সড়কটি নিরাপত্তা ছিল। এক৷ বছর ধরে সড়কটি অনিরাপওা হয়ে উঠেছে। বিশেষ করো রাতে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটছে।পর্যটকেরাও বিচ্ছিন্ন ঘটনার স্বীকার হচ্ছেন। গত শুক্রবার রাত ৯ টা থেকে ১০টার মধ্যে উপজেলার কাস্তল ইউনিয়নের ভাতশালা বড় ব্রীজ এলাকায় এক ঘন্টার মধ্যে তিনটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। রাত ৯ টার দিকে প্রথমে ডাকাতের কবলে পড়েন লালন মিয়া নামের এক আটোরিকশাচালক। লালন মিঠামইন উপজেলার মহরপুর গ্রামের বাসিন্দা।
ডাকাতের কবলে পড়ার সময় লালনের রিকশায় আরোহী ছিল না।শেষে তাকে মারধর করে এবং রিকশাটিতে ভাঙচুর চালিয়ে ক্ষোভ মেটায় ডাকাতেরা।পরে তার কাছে থাকা সর্বস্ব কেড়ে নেয়। মামলার বিষয়ে লালনের কোনো আগ্রহ নেই।এ ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য হলো মামলা করতে গেলে লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্ভবনা বেশি। ২০ মিনিট পর ডাকাতের কবলে পড়েন মিঠামইনের ইসলাম পুর গ্রামের মাসুম মিয়া।অষ্টগ্রামে এক আত্নীয়ের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে ফেরার পথে মাসুম ডাকাতের কবলে পড়েন।তখন সঙ্গে ছিলেন শফির উদ্দিন নামের তাঁর এক আত্নীয়। শফির উদ্দিন মিঠামইনের কাজিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ডাকাতেরা দুজনকেই রক্তাক্ত জখম করে।মামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে মাসুম এড়িয়ে গিয়ে বলেন, দেখি কি করা যায়।আর মামলা করে কি হবে?
১০ মিনিট পর ডাকাতেরা মনির হোসেন নামের আরেক ব্যক্তিকে পিটিয়ে আহত করে ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায়।মনির মিঠামইনের শান্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা। মনির বলেন, 'সড়ক হওয়ার পর নানা প্রয়োজনে প্রায় প্রতিদিন অষ্টগ্রামে আসা-যাওয়া করি।শুক্রবার ব্যবসায়িক কাজে অষ্টগ্রামে গিয়ে ছিলাম। অটোরিকশায় আমি একা ছিলাম। ডাকাতেরা ১০ জনের অধিক ছিল।সবার হাতে ধারালো অস্ত্র। প্রথমে আমাকে মারধর শুরু করে তারপর সব কিছু নিয়ে চলে যায়।'
গতকাল রোববার বিকেলে মুঠোফোনে কথা হয় অষ্টগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলী মোহাম্মদ রাশেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ভুক্তভোগীদের কেউ তো এখনো অভিযোগ নিয়ে থানায় এলেন না।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: