নিউজ ডেস্ক: ইরানের চলমান বিক্ষোভ পঞ্চম সপ্তাহে গড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বিক্ষোভ দমনে সরকারের পদক্ষেপ কী হতে পারে তা নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। অনেকেই বিক্ষোভরত নারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলছেন।
দেশটির আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল ধর্মীয় নেতা মোজতাবা জোলনৌরি বলেন, যে নারীরা তাদের চুল ঢেকে রাখে না, তাদের ৭৪টি বেত্রাঘাতের শাস্তি হওয়া উচিত। যেসব নারী তাদের হিজাব খুলে ফেলে, তাদের জন্য নৈতিক পুলিশের একটি নোটিশ যথেষ্ট না। পাশাপাশি যেসব আইনপ্রণেতা নৈতিক পুলিশকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তাদেরও সমালোচনা করেছেন মোজতাবা।
পোশাকের স্বাধীনতার ইস্যুকে ছাড়িয়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়েছে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষও হচ্ছে। অনেক আইনপ্রণেতাই হিজাবের পক্ষে কঠোর পন্থা অবলম্বনের প্রতি জোর দিয়েছে এবং বিক্ষোভ কঠোরভাবে দমনের আহ্বান জানিয়েছে। তবে অনেক আইনজীবীই চাচ্ছেন শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মেনে নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার উপায় খুঁজতে।
চলমান বিক্ষোভ ঘিরে অনিশ্চয়তায় পড়েছে দেশটির রাজনৈতিক মহল। এর অন্যতম কারণ হলো, ইরান সরকার বিশ্বাস করে, নেতৃত্বহীন এসব বিক্ষোভ দ্রুতই শেষ হবে। সরকারের দাবি, মাত্র ৮০ হাজার লোক রাস্তায় নেমেছে। এ ছাড়া প্রতিবাদকারীদের বিপ্লব সংঘটন বা নেতা তৈরির সামর্থ্যের যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
জনবিক্ষোভ চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে দেশটির অভিজাত রাজনীতিকদের কপালে। দেশ কাঁপানো এই বিক্ষোভ বিদেশি গোয়েন্দা ষড়যন্ত্রের ফসল, নাকি পশ্চিমা নিয়ন্ত্রিত ইন্টারনেটের প্রভাব তা নিয়ে বিতর্ক চলছে বিশ্নেষকদের মধ্যে। তরুণ প্রজন্ম ইসলামী বিপ্লবের মূল্যবোধ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে কিনা, তা নিয়েও চলছে বিশ্নেষণ।
কয়েকজন পর্যবেক্ষক বর্তমানে দেশটির নৃশংসতার মাত্রায় নমনীয়তা দেখছেন। তাঁরা বলেছেন, চলমান বিক্ষোভে ২০০ জনের বেশি প্রাণ হারালেও এই সংখ্যা ২০০৯ সালের তুলনায় কম। সে বিক্ষোভে কয়েক দিনের মধ্যে ৪০০ জন নিহত হয়েছিলেন। সে সময় বিক্ষোভের পর শত শত মানুষকে কাহরিজাক কারাগারে নির্যাতন করা হয়।
৮৩ বছর বয়সী ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনি সংলাপ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এবং বিক্ষোভকে 'ছোট ঘটনা' ও 'বিচ্ছিন্ন দাঙ্গা' বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: