• ঢাকা
  • বুধবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ; ০১ মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • সরকারি নিবন্ধন নং ৬৮

Advertise your products here

banner image
website logo

শ্রীলঙ্কা পারলো, আমাদের চিত্র কি


ঢাকানিউজ২৪.কম ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ০৫ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১২:৫৭ পিএম
শ্রীলংকা
শ্রীলঙ্কার প্রাকৃতিক ছবি

আলী জামান

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আমাদের বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪০.৮০ বিলিয়ন ডলার, ২০২১-২২ অর্থবছরে এটা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে হয়েছে ৯৪.৫০ বিলিয়ন ডলার। আর চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৫.৭১ বিলিয়ন ডলার। 

২০২১-২২ অর্থবছর শেষে স্বল্প মেয়াদী বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ২০.৬৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে এর পরিমাণ কত হয়েছে সেই তথ্য এখনো প্রকাশিত হয়নি। অন্যদিকে গত ৩০ আগস্ট পর্যন্ত দেশের মোট রিজার্ভের পরিমাণ ২৩ বিলিয়ন ডলার। 

যদি ধরে নিই, স্বল্পমেয়াদী ঋণের পরিমাণ আর বাড়েনি, তাহলে এটি বর্তমান রিজার্ভের প্রায় ৯০ ভাগ। বলা হয়ে থাকে, স্বল্প মেয়াদী বিদেশি ঋণের পরিমাণ যদি রিজার্ভের অর্ধেক হয়, তাহলেই সেটি যে কোন দেশের জন্য রেড সিগন্যাল। তাহলে এই ৯০ ভাগ কোন ধরনের সিগন্যাল দিচ্ছে? 

কোন দিকে সিগন্যাল দেবে...আবার?
.....এই স্বল্পমেয়াদী ঋণ যদি শোধ করতেই হয়,তবে শ্রীলংকার মত সাময়িক দেউলিয়া হবার কথা আমাদেরকেও বলতে হবে।

তবে পার্থক্য এইখানে যে,ওরা ঘুরে দাড়াচ্ছে।আমরা সেইটা পারবো না।
আমাদের রেমিট্যান্স কমছে,শ্রীলংকার বাড়ছে।শ্রীলংকার এক্সপোর্ট বাড়ছে,আমাদের কমছে।ওদের পর্যটন খাতের আয় এখন বাড়ছে জ্যামিতিক হারে।

আমাদের অর্থনীতির আকার বেড়েছে। সেই সাথে রাজস্বও বেড়েছে অনেক।কিন্তু দুর্ভাগ্য, এই রাজস্বের কোন অংশ আমরা উন্নয়ন ব্যয়ে লাগাতে পারছি না।সবই রাজস্ব খাতে ব্যয় হয়ে যাচ্ছে।ব

 বাজেটে গত বছর ঘোষনা দিয়ে বলা হয়েছিল,উন্নয়ন খাতে ২ লাখ ছেচল্লিশ হাজার কোটি টাকার পুরোটাই আসবে দেশী বিদেশী বৈদেশিক ঋণ থেকে।এবারো একই কথা বলা হয়েছে।বলা হয়েছে- উন্নয়ন বাজেট(মেগা প্রকল্প সহ) এর দুই লাখ তেষট্টি কোটি টাকার পুরোটাই ঋণ করে ব্যয় করতে হবে।

শ্রীলংকার খাদ্য মুল্যস্ফীতি ৯৫% আর গড় মুল্যস্ফীতি ৭০% থেকে আগষ্টে ৪% এ নেমে এসেছে।শ্রীলংকা পুরোপুরি ঘুরে দাড়িয়েছে।দেশপ্রেম আর ডেডিকেশন থাকায়- তারা পেরেছে।

তাদের এক্সপোর্ট বেড়েছে, রেমিট্যান্স বেড়েছে,পর্যটন খাতে আয় বেড়েছে।আমাদের থেকে নেয়া ২০০ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১৫০ মিলিয়ন শোধ করে দিয়েছে।দেউলিয়া ঘোষিত দেশটি তাদের ঋণদাতাদেরকে স্বল্প সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধের অঙ্গীকার করেছে।

কিভাবে এইটা সম্ভব হলো?

দেশটিতে রাজনৈতিক হানাহানি ছিল তুঙ্গে।প্রেসিডেন্ট গোদাবায়াকে দেশছাড়া করা হয়েছিল।

এই অবস্থায় উত্তরনের প্রধান কারিগর ঐ দেশের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী। তারা গোদাবায়া রাজাপাক্সেকে নিরাপত্তা দিয়ে দেশে ফিরিয়ে এনেছে।বিবদমান দুই পক্ষকে একত্রে আসতে বাধ্য করেছে।সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্বেও রাজপাক্সেদের দল ক্ষমতার বাইরে।কিন্তু তারা রনিল বিক্রমসিংহকে অকুন্ঠ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।

দুর্নীতি প্রায় শুন্যের কাছাকাছি।কারন,শাস্তির ভয়।ইতোমধ্যে বিচার করে অনেক দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী আর আমলাদেরকে শাস্তি দেয়া হয়েছে।

সারা দেশের মানুষ একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়েছে কর্মযজ্ঞে।নিশ্চিত দুর্ভিক্ষের কবল থেকে দেশটাকে উদ্ধার করেছে।

এর বিপরীতে আমাদের দেশের চিত্র কি?

লেখক, বিশিস্ট অথনীতি বিশ্লেষক, এফবিসিসিআই মেম্বার।

ঢাকানিউজ২৪.কম / এসডি

আরো পড়ুন

banner image
banner image