মোঃ জাহিদুল ইসলাম, বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি, বরিশাল : বাকেরগঞ্জ উপজেলার গ্রাম পর্যায়ে হাতুরে প্রানী চিকিৎসকদের অপ চিকিৎসায় ধ্বংস হচ্ছে খামারী সহ কৃষক দের গবাদিপশু। দিন দিন বেড়েই চলেছে এসব আনারী হাতের ভুয়া প্রাণী চিকিৎসকের চিকিৎসা কার্যক্রম।
এদের স্বীকৃত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাণী চিকিৎসকের উপর কোনো ডিগ্রী বা প্রশিক্ষন নেই। তবুও এরা অভিজ্ঞ প্রাণী চিকিৎসক দাবি করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন উপজেলা জুড়ে।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত পল্লী এলাকার আনাচে-কানাচে এইসব স্ব ঘোষিত কথিত প্রানী চিকিৎসকরা ব্যাগ ভর্তি ঔষধ পএ নিয়া ছুটে চলে এ বাড়ি ও বাড়ি ।
অধিকাংশক্ষেত্রে তাদের অনেকেই স্কুলের গন্ডি পেরুতে পারেনি। কিন্তু নামের আগে শোনা যায় ডাঃ শব্দ ব্যবহার করতে। এরা চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষের সাথে করে যাচ্ছেন প্রতারণা।
উপজেলা জুড়ে কথিত প্রাণী চিকিৎসকেরা প্রাণী চিকিৎসার নামে প্রতারণা ও সাধারণ মানুষের পকেট কেটে নিজেদের পকেট ভারী করছে। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন কিংবা প্রানীসম্পদ দপ্তর এসব কথিত প্রাণী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে প্রশাসন থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় সাধারণ মানুষ অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছে।
এসব কথিত প্রাণী চিকিৎসকদের প্রতারণা বন্ধে প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনার এখনই মোক্ষম সময় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
স্থানীয়রা জানান, এসব কথিত প্রাণী চিকিৎসকদের চিকিৎসা কার্যক্রম ও দোকান সরেজমিন পরিদর্শন করা হলেই এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে। অল্প পুঁজিতে বা কখানো কখানো বিনা পুঁজিতে অধিক মুনাফা হওয়ায়, উপজেলা জুড়েই ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে প্রাণী চিকিৎসক।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বিভিন্ন বাজার হাটে কোন প্রকার প্রশিক্ষণ ছাড়াই অবাধে ওষুধের দোকান খুলে প্রাণী চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন প্রাণীর সব ধরণের রোগের চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। নাম সর্বস্ব কোম্পানির নিম্নমাণের ওষুধ বিক্রি করে প্রতারণা করেও আসছেন তারা। অভিযোগ রয়েছে, সাধারণ মানুষ ওষুধের বিষয়ে তেমন সচেতন না হওয়ায় সেই সুযোগ নিয়ে নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে অহরহ। অথচ এদের নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রী ও রোগ নির্ণয়ের অভিজ্ঞতা। কিন্তু চিকিৎসক পরিচয়ে অনুমান নির্ভর হয়ে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করে যাচ্ছেন। অধিকাংশক্ষেত্রে এদের খপ্পরে পড়ে গবাদি পশুর প্রাণীর মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
সরেজমিনে উপজেলার গারুরিয়া-, কলসকাঠি, দূর্গাপাশা,ও ফরিদপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে এবং গবাদিপশুর খামারী মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে উপজেলা সদর অনেক দুর হওয়ায় এইসব হাতুরে গ্রাম্য চিকিৎসক দের বিচরন লক্ষনীয় মাএায় বেড়েছে।
এরা সাধারণ মানুষকে ধোকা দিয়ে বিক্রি করছেন ভুঁইফোড় নিম্নমানের কোম্পানির ওষুধ। কারণ তারাই চিকিৎসক, আবার তারাই ওষুধ বিক্রেতা। ফলে অধিক মুনাফার আশায় উচ্চ মুল্যর অপ্রোজনীয় ওষুধ কিনতে প্রাণী মালিকদের বাধ্য করা হচ্ছে।
এদের সাথে আবার উপজেলা প্রানী সম্পদ দপ্তরের কর্মচারীদের রয়েছে খুব ঘনিষ্টতা। অনেক সময় এইসব অখ্যাত চিকিৎসকরা সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে গবাদিপশুর বিভিন্ন রোগ যেমন তরকা,বাদলা, ক্ষুরারোগের ভ্যাকসিন স্বল্প মূল্যে নিয়া অনেক বেশি দামে গ্রামে খামারিদের মাঝে সরবরাহ করেন।
তাদের চিকিৎসায় অনেক গবাদি প্রাণীর মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে অভিযোগ করেও কোনো ফায়দা হয়নি।
এবিষয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সালেহ আল রেজা বলেন, তিনি এখানো কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি, তবে এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন হাতুরে চিকিৎসকরা কোন উচ্চ মাএার এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে পারবে না। এআই কর্মী সম্পকে উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এরা মাঠ পর্যায়ে শুধু মাএ সিমেন দিতে পারবে কিন্তুু তারা কোন জটিল রোগের চিকিৎসা দিতে পারবেনা।
প্রশিক্ষন ছাড়া প্রাণী চিকিৎসা দেয়ার কোন সুযোগ নাই। তিনি বলেন, এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: