মো. নজরুল ইসলাম, ময়মনসিংহ : আগামী জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অন্যথায় রাজপথেই ফয়সালা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন । ময়মনসিংহ শহরের পলিটেকনিক মাঠে শনিবার বিকেলে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘কথায় কথায় হুংকার দেবে, কথায় কথায় ভয় দেখাবে, তোমাদের হুংকারে বাংলাদেশের মানুষ এখন আর ভয় পায় না। বাংলাদেশের মানুষ এখন জেগে উঠেছে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত যে উত্তাল তরঙ্গ দেখা যাচ্ছে এতে আওয়ামী লীগ ভেসে যাবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দুইটা জিনিস আওয়ামী লীগের বডি কেমিস্ট্রিতে আছে। ওখান থেকে তারা বের হতে পারে না। একটা হচ্ছে চুরি, আরেকটা হচ্ছে সন্ত্রাস। দেখবেন, তারা কথায় কথায় লাঠি নিয়ে আসবে, ভয় দেখাবে। ’
বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর থেকে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও কারাগারে থাকা নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি করে ফখরুল বলেন, আমাদের দাবি একটাই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। দেশনায়ক তারেক রহমানের ওপর থেকে সব মামলা প্রত্যাহার করে দেশে আসার সুযোগ দিতে হবে।
বিএনপির সমাবেশে সভাপতিত করেন ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম। স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুটু, বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপির আব্দুস সালাম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপির ফজলুর রহমান, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন, সহ-সাংগঠনিক শরিফুল আলম, কেন্দ্রীয় মহিলা বিএনপির সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক ডাঃ মাহবুবুর রহমান লিটন, শেরপুর বিএনপির সভাপতি আহবায়ক মাহমুদুল হক রুবেল, সাবেক যুবদল সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক এনায়েতুল্লাহ বেলাল, নেত্রকোণা জেলা বিএনপির আহবায়ক আনোয়ারুল হক প্রমূখ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, চাল-ডালসহ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগেিত মানুষ কষ্ট করছে । ১০টাকার চাল এখন ৯০ টাকা, বিনা পয়সার সার এখন পাচ্ছে না। ঘরে ঘরে বিনা পয়সায় চাকরি দেয়ার নামে এখন ২০ লাখ টায় চাকরি দিচ্ছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন করে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীন মত প্রকাশের স্বাধীনতাকেও হরণ করেছে। সারাদেশে ত্রাস সৃষ্টি করেছে। সরকার দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠান ও অর্জনকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সবচেয়ে বড় যে ক্ষতি করেছে ভোটদানের অধিকারকে। অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে সেই সরকারের অধীনে যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে যে পার্লামেন্ট তৈরি হবে তা হবে জনগণের সরকার।
সকাল থেকেই বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ময়মনসিংহে এসেছে। রাতে মঞ্চ তৈরির সময় কয়েক হাজার নেতাকর্মী ছিল পলিটেকনিক মাঠে। বাস বন্ধ হওয়ায় ট্রেন ও নদীপথে অনেকে সম্মেলনে যোগ দেন।
প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে নগরীর রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে শনিবার দিনভর অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, সহ-সভাপতি মোঃ আমিনুল হক শামীমসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সেখানে অবস্থান নেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম /
আপনার মতামত লিখুন: