
মোহাম্মদ রুবেল
সাম্প্রতিককালে বারবার অগ্নিদুর্ঘটনা ও গ্যাস বিস্ফোরণকে সন্দেহজনক মনে করছে ১৪ দলীয় জোট। এসব ঘটনাকে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলের সময়ে যে থানা লুট, পাটেরগুদামে আগুন দেওয়া হয়েছিল তার সঙ্গেও মিল রয়েছে বলেও মনে করছে জোট নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেন, বিভিন্ন জায়গায় যে গ্যাস বিস্ফোরণ হচ্ছে এবং অগ্নি সংযোগের যে ঘটনাগুলি যে যাই বলুক না কেন আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে অনেক সন্দেহও হয়। কারণ বঙ্গবন্ধুর সময়েও এরকম থানা লুট, পাটের গুদামে আগুন এরকম বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সংঘটিত হতো।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের দিকে দৃষ্টি দিয়ে তিনি বলেন, পরবর্তীতে যা ঘটলো তা তো দেখেছি। আজকে কোনো জায়গায় গ্যাস বিস্ফোরণ, অগ্নি সংযোগ এটা কোনো কথা হতে পারে না।
সোমবার রাজধানীর ইস্কাটনে আমির হোসেন আমুর নিজ বাসভবনে ১৪ দলীয় জোটের জোটের অনুষ্ঠিত সভায় এমন সন্দেহে ও উদ্বেগ জানানো হয়।
এ বিষয়ে জোটের সমন্বয়ক আমু বলেন, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসুক। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্ত, কেউ হস্তক্ষেপ করবে না, কে জড়িত বের হয়ে আসবে।
সরকারের সতর্ক থাকা উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। এই জিনিসগুলি অন্তর্নিহিত ব্যাপারগুলো সামনে আসলে বোঝা যাবে কে এর সঙ্গে জড়িত। এসব ঘটনা ধামাচাপা না দিয়ে আমরা মনে করি বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে খতিয়ে দেখা উচিত।
১৪ দলকে হালুয়া রুটির জোট নয় দাবি করে আমির হোসেন আমু বলেন, ১৪ দল আদর্শিক জোট। এখানে কোনো ফাঁটল নেই। যেহেতু আদর্শের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে, অনেক দল অনেক কিছু পায়নি, তারপরও জোটে আছে।
জোটে দ্বিধাবিভক্তি নেই দাবি করে আমু বলেন, ১৪ দল নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। সংবিধানের চার মূলনীতির ওপরে জিয়া কুঠারাঘাত করেছিল। জিয়া এদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রবেশ ঘটিয়েছিল। এই দেশে সংবিধান নিয়ে কথা বলার অধিকার দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, দেশে সংবিধান ভিত্তিক রাজনীতি চলছে, চলবে। গণতান্ত্রিক পন্থায় আইনানুযায়ী হবে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হওয়ার ব্যাপারে ১৪ দল ঐক্যবদ্ধ। এখানে আর কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কেউ যদি নির্বাচনে না আসে সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তারা যদি নির্বাচনের আগেই তারা পরাজয় মেনে নেয়, নিক।
এক্ষেত্রে নির্বাচন বিতর্কিত হবে কীনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ তারা আগেও কয়েকবার করেনি। তাতে কী এসে গেছে? নির্বাচন হয়েছে এবং সরকার গঠন হয়েছে, পরিচালিতও হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগেরমুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভেকেট মৃনাল কান্তি দাস, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. অসিত বরন রায়, বাংলাদেশের গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, গণ আজাদী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এস কে সিকদার, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, জাতীয় পার্টির (জেপি) সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল খায়ের সিদ্দিকী আবু, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ফারুকী উপস্থিত ছিলেন।
এদেক যানজটের কারণে উপস্থিত থাকতে পারেননি ১৪ দলের অন্যতম নেতা জাসদ (ইনু) সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
ঢাকানিউজ২৪.কম / এম আর
আপনার মতামত লিখুন: